নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহজুড়ে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমার পাশাপাশি সূচকের নেতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে; একইসঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন ১৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে গেল সপ্তাহের বাজার মূলধন কমেছে এক দশমিক ৮৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে পাচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে আর গত সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫১ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১৭ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৮৩৯ দশমিক ৪৪ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ৩২ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১৫ শতাংশ কমে এক হাজার ৪৭৫ দশমিক ৭২ পয়েন্টে পৌঁছায়। অন্যদিকে ডিএস৩০ সূচক ৫৮ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৯ শতাংশ কমে দুই হাজার ৫১৪ দশমিক ৯৮ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৯২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৩টির, কমেছে ২৯৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৭ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ৫টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৯৯৬ কোটি ৯৭ লাখ ৩১ হাজার ৩২৪ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় এক হাজার ১৯৩ কোটি ৪২ লাখ ৫৯ হাজার ৫৬৯ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ৮৯ লাখ ২৫ হাজার ২৯৫ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫ হাজার ৯৬৭ কোটি ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৮৪৫ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে; যা শতাংশের হিসেবে ৩৩ দশমিক ১৭ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল পাঁচ লাখ ৬০ হাজার ৯২৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল পাঁচ লাখ ৫০ হাজার ৩৫৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে এক দশমিক ৮৯ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ২২ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৭৯ লাখ ১৫ হাজার ২৫০ টাকার শেয়ার। সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৫ কোটি ১৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা।
সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ বা ৯০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ১৯ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে এক কোটি ৩১ লাখ ৬২ হাজার ৫৬১টি শেয়ার ৪ হাজার ৪৬৪ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ২৬ কোটি ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ১৮ টাকা ৯০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২৪ টাকা ৮০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।
কোম্পানিটি ২০১৬ সালে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির ৩০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ২০০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ১৩০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট ২০ কোটি সাত লাখ ৫৫ হাজার ৫০০ শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৩২ দশমিক ১৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৩ দশমিক ৮০ শতাংশ ও বাকি ৫৪ দশমিক ০৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা ক্রাউন সিমেন্ট পিএলসির শেয়ারদর বেড়েছে ২১ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা যথাক্রমে এপেক্স স্পিনিং অ্যান্ড নিটিং মিলস লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। এডিএন টেলিকম লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। পঞ্চম অবস্থানে থাকা প্যাসিফিক ডেনিমস লিমিটেডের ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়েছে। জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৯ দশমিক ২০ শতাংশ, জাহিন স্পিনিং লিমিটেডের ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ, মুন্নু এগ্রো অ্যান্ড জেনারেল মেশিনারিজ লিমিটেডের ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ডেল্টা স্পিনার্স লিমিটেডের ৭ দশমিক ০৭ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
