নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহজুড়ে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্র্তিত থাকলেও সূচকের মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে; একইসঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন ৪১ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে গত সপ্তাহের বাজার মূলধন বেড়েছে শূন্য দশমিক ০৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে, আর গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে ৬ হাজার ২১৪ দশমিক ২০ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ১ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১১ শতাংশ কমে এক হাজার ৩৪৭ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে পৌঁছায়। অন্যদিকে ডিএস৩০ সূচক ১০ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪৮ শতাংশ কমে দুই হাজার ১৯৮ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৪০১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৬টির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৪৪ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ২৩টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৫৭৮ কোটি ৬৬ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭৭ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৪০৯ কোটি ৭৯ লাখ ৩৯ হাজার ৯৩৩ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৪১ দশমিক ২১ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৮৯৩ কোটি ৩৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৮৫ টাকা, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৬৩৯ কোটি ১৭ লাখ ৫৯ হাজার ৭৩৩ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার বেড়েছে, যা শতাংশের হিসাবে ৭৬ দশমিক ৫১ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি জেমিনি সি ফুড লিমিটেড। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৭১ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ টাকার শেয়ার। সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯৮ কোটি ৫৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে শেয়ারদর ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ বা ৪৯ টাকা ৮০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ৭১৪ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনভর কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৬৯৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭১৪ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়। দিনজুড়ে ২ লাখ ১৮ হাজার ৭৫৯টি শেয়ার মোট ১ হাজার ১৫৮ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ১৫ কোটি ৫৭ লাখ ১০ হাজার টাকা। আর গত এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ২৯৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে ৬৮ টাকা ৯০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।
গত সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট এক কোটি ৭৮ লাখ ৬৮ হাজার ৯১৪টি শেয়ার ১৭৮ কোটি ৩৯ লাখ পাঁচ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়েছে। সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ বা এক টাকা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ১০০ টাকা ২০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ৪৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪৫৫ শেয়ার মোট পাঁচ হাজার ৪৪৫ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৪৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। দিনজুড়ে শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৯৯ টাকা ৭০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১০৩ টাকা ২০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৬৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৪০ পয়সায় ওঠানামা করে।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে লেনদেনের তালিকায় দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেড। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট এক কোটি ৫৬ লাখ ৪৭ হাজার ২৫২টি শেয়ার ১৭৭ কোটি ১২ লাখ ৪৮ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ৬ দশমিক ৭২ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসে আমরা নেটওয়ার্কস লিমিটেড। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট দুই কোটি ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৩৯৭টি শেয়ার ১৪৮ কোটি ৮৭ লাখ ৬১ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ১৫ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়েছে। এর পরের অবস্থানে উঠে আসে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট এক কোটি তিন লাখ আট হাজার ৭৯৩টি শেয়ার ১১০ কোটি ১৫ লাখ ৭২ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর শূন্য দশমিক ২৪ শতাংশ কমেছে। আর লেনদেনের তালিকায় পঞ্চম অবস্থানে উঠে আসে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির মোট এক কোটি ৪৭ লাখ চার হাজার ৪৫৭টি শেয়ার ১১০ কোটি ১৫ লাখ ৭২ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৮১ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ৩ দশমিক ২৯ শতাংশ কমেছে।