নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহজুড়ে সূচক, শেয়ারদর ও লেনদেনে পতন হয়েছে। সব কয়টি সূচক পতনের পাশাপাশি দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে তিন দশমিক ৫৬ শতাংশ। সে সঙ্গে মোট লেনদেনও একই হারে কমেছে। আগের সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়। গত সপ্তাহেও চার কার্যদিবস লেনদেন হয়। এর মধ্যে একদিন সূচক ইতিবাচক ছিল। কমেছে তিন দিন। সূচক পতনের হার অনেক বেশি ছিল। কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর। বাজার মূলধন কমেছে দশমিক ৩৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক, শেয়ারদর ও লেনদেনে একই চিত্র লক্ষ্য
করা যায়।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে চার হাজার ৪১৮ দশমিক ৮৪ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক দুই দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বা দশমিক ২৬ শতাংশ কমে ৯৯৪ দশমিক ৯০ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএস৩০ সূচক চার দশমিক ৫২ পয়েন্ট বা দশমিক ৩০ শতাংশ কমে এক হাজার ৫০৮ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৫৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৯০টির, কমেছে ২২৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৭ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি দুটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ২৬৯ কোটি ৭৬ লাখ ৫৭ হাজার ৫৮২ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ২৭৯ কোটি ৭৩ লাখ ছয় হাজার ৪০৭ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বা তিন দশমিক ৫৬ শতাংশ।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৭৯ কোটি ছয় লাখ ৩০ হাজার ৩৩০ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল এক হাজার ১১৮ কোটি ৯২ লাখ ২৫ হাজার ৬২৬ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে ৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা বা তিন দশমিক ৫৬ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৩৯ হাজার ৬০৪ কোটি ৫৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৩৮ হাজার ৪৯৩ কোটি ৪১ লাখ ১৪ হাজার টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে দশমিক ৩৩ শতাংশ বা এক হাজার ১১১ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে আনলিমা ইয়ার্ন। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোতে থাকা এইচ আর টেক্সটাইলের দর ১২ দশমিক ৮৩ শতাংশ, প্রাইম টেক্সটাইল স্পিনিং মিলসের ১১ দশমিক ৫৬ শতাংশ, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির দর ১০ দশমিক ৩২ শতাংশ বেড়েছে। কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজের দর ১০ শতাংশ, সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালসের দর ৯ দশমিক ১২ শতাংশ, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির দর সাত দশমিক ১৩ শতাংশ, মতিন স্পিনিংয়ের দর ছয় দশমিক ৭১ শতাংশ, রানার অটোমোবাইলের দর ছয় দশমিক ৫৯ শতাংশ, কনফিডেন্স সিমেন্টের দর ছয় দশমিক ২০ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে সাপ্তাহিক দরপতনের শীর্ষে অবস্থান করে আজিজ পাইপস। সোনালী আঁশের দর ১২ দশমিক ৪২ শতাংশ, যমুনা অয়েলের দর ১২ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, রিং শাইন টেক্সটাইলের দর ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের দর ১০ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের দর ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ, ফ্যামিলি টেক্সের দর ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ডের দর ৯ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, ফার্মা এইডসের দর ৯ দশমিক শূন্য চার শতাংশ ও গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রোর দর আট দশমিক ৬৮ শতাংশ কমেছে।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলোÑখুলনা পাওয়ার কোম্পানি, স্কয়ার ফার্মা, রিং শাইন টেক্সটাইল, বীকন ফার্মা, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো, জেনেক্স ইনফোসিস।
অন্যদিকে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৯৪টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৬টির, কমেছে ১৮০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৮টির দর।
সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স কমেছে দশমিক ৫২ শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক দশমিক ৪৯ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক কমেছে দশমিক ২২ শতাংশ, সিএসআই সূচক দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক কমেছে দশমিক ১৪ শতাংশ।
সিএসইতে গেল সপ্তাহে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়ায় ৬৬ কোটি ৮০ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৩ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬৫ কোটি ৮১ লাখ ৫১ হাজার টাকা। লেনদেন কমেছে ৯৯ লাখ ২৪ হাজার টাকা।
১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ বেড়ে সিএসইতে সাপ্তাহিক টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে ইমাম বাটন। আনলিমা ইয়ার্ন ডায়িংয়ের দর ১৮ দশমিক ৫০ শতাংশ, বিচ হ্যাচারির দর ১৮ দশমিক ১৮ শতাংশ, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ১৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। এরপরের অবস্থানগুলোতে থাকা এমারাল্ড অয়েলের দর ১৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ, প্রাইম টেক্সটাইল স্পিনিং মিলসের দর ১২ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ, কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজের দর ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ, সায়হাম টেক্সটাইলের দর ১১ দশমিক ১১ শতাংশ, প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের দর ১০ দশমিক ৯৩ শতাংশ, সিলকো ফার্মার দর ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ১৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ কমে টপ টেন লুজার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে আজিজ পাইপস। মিথুন নিটিংয়ের দর ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে। এর পরের অবস্থানগুলোতে ছিল আরামিট লিমিটেড, যমুন অয়েল, রিং শাইন টেক্সটাইল, ইস্টার্ন কেব্লস, গোল্ডেন হার্ভেস্ট, এএফসি এগ্রো, প্রগতি ইন্স্যুরেন্স, গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলোÑলিন্ডে বাংলাদেশ, এসকে ট্রিমস, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রিং শাইন টেক্সটাইল, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, খুলনা পাওয়ার, রেকিট বেনকিজার, ওয়েস্টার্ন মেরিন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
