নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে নেতিবাচক গতিতে লেনদেন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দৈনিক গড় লেনদেন ও মোট লেনদেন কমার পাশাপাশি কমেছে সবকটি সূচক। দৈনিক গড় লেনদেন ও মোট লেনদেন কমেছে এক দশমিক ৭৮ শতাংশ হারে। সেই সঙ্গে বাজার মূলধন কমেছে এক দশমিক ২১ শতাংশ। গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়। আগের সপ্তাহেও পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক ও শেয়ারদর ও লেনদেনে একই চিত্র দেখা গেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের প্রথমদিনে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অবস্থান করে চার হাজার ৫১৩ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে। শেষ কার্যদিবসে এর অবস্থান ছিল চার হাজার ৪৬৯ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে। এর ফলে সূচক কমেছে ৪৪ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৮ শতাংশ।
এছাড়া ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক সাত দশমিক ২১ পয়েন্ট বা দশমিক ৭০ শতাংশ কমে এক হাজার ২৮ দশমিক ২৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএস৩০ সূচক ১৯ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বা এক দশমিক ২৬ শতাংশ কমে এক হাজার ৫২৪ দশমিক শূন্য চার পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে ৩৬০টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৮টির। কমেছে ২১৮টির। অপরিবর্তিত ছিল ২২টির দর। লেনদেন হয়নি দুটির।
গত সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৪৪৫ কোটি ৯ লাখ ১২ হাজার ৩২৭ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৪৫৩ কোটি ১৫ লাখ ৭৯ হাজার ৯৭৪ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে আট কোটি ছয় লাখ ৬৭ হাজার টাকা বা এক দশমিক ৭৮ শতাংশ। গত সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় দুই হাজার ২২৫ কোটি ৪৫ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৬ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ২৬৫ কোটি ৭৮ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬৯ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ৪০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বা এক দশমিক ৭৮ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথমদিন বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৪৫ হাজার ৬৯ কোটি ৪২ লাখ ২৩ হাজার ৯৮০ টাকা। শেষদিনে বাজার মূলধন দাঁড়ায় তিন লাখ ৪০ হাজার ৮৯২ কোটি ৮৫ লাখ ২০ হাজার ৩১ টাকায়। এ হিসেবে বাজার মূলধন কমেছে চার হাজার ১৭৬ কোটি টাকা বা এক দশমিক ২১ শতাংশ।
১৮ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়ে সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে বস্ত্র খাতের ভিএফএস থ্রেড ডায়িং। এর পরের অবস্থানগুলোতে থাকা ইন্দোবাংলা ফার্মার দর ১৮ দশমিক শূন্য আট শতাংশ, নর্দার্ণ জুটের দর ১৭ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের দর ১৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, এমএল ডায়িংয়ের দর ১৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ, ওইম্যাক্স ইলেকট্রোডের দর ১৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ, শাশা ডেনিমসের দর ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ, মালেক স্পিনিংয়ের দর ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের দর ১২ দশমিক ২৮ শতাংশ, জিবিবি পাওয়ারের দর ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়েছে।
১৩ দশমিক ২২ শতাংশ কমে সাপ্তাহিক দরপতনের শীর্ষে ছিল বিএসআরএম স্টিল লিমিটেড। ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের শেয়ারদর ১২ দশমিক ৫১ শতাংশ, বিআইএফসির দর ১২ শতাংশ, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ফিন্যান্সিয়ার সার্ভিসেসের দর ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ, সিলকো ফার্মার দর ১১ দশমিক ১৫ শতাংশ, বাংলাদেশ ল্যাম্পসের দর ১১ দশমিক ১১ শতাংশ, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর ১১ দশমিক ১১ শতাংশ, এসইএমএল আইবিবিএল শরিয়াহ্ ফান্ডের দর ১১ দশমিক ১১ শতাংশ ও এমআই সিমেন্টের দর ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ ও জেমিনি সি ফুডের দর ১০ দশমিক ৬০ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে ৩০৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৪টির, কমেছে ১৭৫টির, অপরিবর্তিত ছিল ১৫ কোম্পানির শেয়ারদর। গত সপ্তাহে লেনদেন হয় ১০১ কোটি ৩২ লাখ ৪৪ হাজার ৩৩৭ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১৬৫ কোটি ৫৯ লাখ ছয় হাজার ১৭১ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৬৪ কোটি ২৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা।
সিএসইতে সিএসসিএক্স সূচক কমেছে এক দশমিক ২১ শতাংশ, সিএএসপিআই সূচক কমেছে এক দশমিক ১৪ শতাংশ, সিএসই ৩০ সূচক এক দশমিক ৫৭ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক এক দশমিক ৯৯ শতাংশ ও সিএসআই সূচক কমেছে দশমিক ৫৩ শতাংশ।
৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ। সাফকো স্পিনিংয়ের দর ১৯ দশমিক ২৭ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিংয়ের দর ১৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ, ইন্দোবাংলা ফার্মার দর ১৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ, ভিএফএস থ্রেডের দর ১৭ দশমিক ৫২ শতাংশ, এমএল ডায়িংয়ের দর ১৬ শতাংশ, ওইম্যাক্স ইলেকট্রোডের দর ১৫ দশমিক ৪২ শতাংশ, আইটি কনসালট্যান্টেসের দর ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশ, মালেক স্পিনিংয়ের দর ১৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ ও শাশা ডেনিমসের দর ১২ দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়েছে।
১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ। এর পরের অবস্থানগুলোতে ছিল ইমাম বাটন, বিএসআরএম স্টিল, জাহিন স্পিনিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, সিলকো ফার্মা, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, মোজাফফর হোসেন স্পিনিং, এনএলআই ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলোÑপ্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, লাফার্জহোলসিম, এসএস স্টিল, এডিএন টেলিকম, রিং শাইন টেক্সটাইল, বেক্সিমকো লিমিটেড, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো।
