নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে সবগুলো সূচক বাড়লেও দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ। দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে কারণ গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হলেও বেশিরভাগ শেয়ারের দর অপরিবর্তিত ছিল যে কারণে মোট লেনদেন কমেছে। তবে বাজার মূলধন বেড়েছে শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের মিশ্র প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আট দশমিক ৭০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২২ শতাংশ বেড়ে তিন হাজার ৯৬৯ দশমিক ২৮ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক শূন্য দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ বেড়ে ৯১৯ দশমিক ৫০ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএস ৩০ সূচক চার দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৩২৫ দশমিক ৪৩ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৬০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৩টির, কমেছে ২০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৮৪ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি ২৩টির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৫৬ কোটি ৮৭ লাখ ছয় হাজার ৫১৬ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৬৭ কোটি ৮৪ লাখ ৯০ হাজার ৫৪ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১০ কোটি ৯৭ লাখ ৮৩ হাজার ৫৩৮ হাজার টাকা বা চার দশমিক ২৫ শতাংশ।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৮৪ কোটি ৩৫ লাখ ৩২ হাজার ৫৮০ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৯ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার ২৭১ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে ৫৪ কোটি ৮৯ লাখ ১৭ হাজার ৬৯১ টাকা বা ১৬ দশমিক ১৮ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ১০ হাজার ৪৬৬ কোটি ২৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ১০ হাজার ৮৩৪ কোটি ৭৮ লাখ ১৭ হাজার টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ বা ৩৬৮ কোটি ৫২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি এমবি ফার্মা লিমিটেড গত সপ্তাহে দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে আট দশমিক ২৯ শতাংশ। গত সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় লেনদেন হয়েছে চার লাখ ৬৬ হাজার ১০০ টাকার শেয়ার। সপ্তাহ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৫০০ টাকা।
তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস লিমিটেড। কোম্পানিটির শেযারদর বেড়েছে পাঁচ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ৯ লাখ তিন হাজার ৩৪০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৪৫ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ টাকার শেয়ার।
তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফার্মা এইডস লিমিটেড। ওষুধ ও রসায়ন খাতের ‘এ’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে চার দশমিক ৩৬ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯৮০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৭৪ লাখ ২৯ হাজার ৯০০ টাকার শেয়ার।
তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। বিমা খাতের ‘এ’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে তিন দশমিক ৮৬ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন এক লাখ ১৫ হাজার ৭৬০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে পাঁচ লাখ ৭৮ হাজার ৮০০ টাকার শেয়ার।
তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। বিমা খাতের ‘বি’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে দুই দশমিক ৫৮ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির প্রতিদিন তিন লাখ ১০ হাজার ৫২০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরো সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১৫ লাখ ৫২ হাজার ৬০০ টাকার শেয়ার।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ১৬৭টি শেয়ার তিন কোটি ১৩ লাখ ৭২ হাজার ৯০০ টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের এক দশমিক ১০ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর দুই দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়েছে।
তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটির ১৫ লাখ ৫৭ হাজার ৬৮৪টি শেয়ার এক কোটি ২২ লাখ ৫২ হাজার ৮০০ টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর দুই দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ বেড়েছে।
আর লেনদেনের তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে ছিল লিন্ডে বাংলাদেশ লিমিটেড। কোম্পানির শেয়ারদর দুই টাকা ৭৪ পয়সা কমেছে। আলোচ্য সপ্তাহে কোম্পানিটির ৮৯ হাজার ৭১২ শেয়ার এক কোটি ১৬ লাখ ১১ হাজার টাকায় লেনদেন হয়, যা মোট লেনদেনের শূন্য দশমিক ৪১ শতাংশ।
তালিকায় চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে ছিল যথাক্রমে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট (এক্সিম) ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড এবং রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ লিমিটেড। এরপরের অবস্থানে থাকা কোম্পানিগুলো হলো, ইন্দো-বাঙলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, ওয়াটা কেমিক্যালস, ফার্মা এইডস এবং আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড।
অন্যদিকে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২০২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৫টির, কমেছে ২০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৫৭টির দর।
সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স কমেছে শূন্য দশমিক শূন্য শূন্য চার শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক শূন্য দশমিক শূন্য সাত শতাংশ বেড়েছে, সিএসই৫০ সূচক বেড়েছে দশমিক শূন্য সাত শতাংশ, সিএসআই সূচক দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে তবে সিএসই৩০ সূচক দশমিক শূন্য ১১ শতাংশ কমেছে।