নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহজুড়ে সূচকে ছিল মিশ্র প্রবণতা। মোট লেনদেন ও দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে এক দশমিক ১৭ শতাংশ। কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারদর। তবে ডিএস৩০ সূচক কমলেও বেড়েছে ডিএইএক্স ও ডিএসই শরিয়াহ সূচক ইতিবাচক ছিল। বেড়েছে বাজার মূলধন। গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে তিন দিন সূচক বেড়েছে, কমেছে দুদিন। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ সূচক লেনদেন বাড়লেও কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারদর।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এক দশমিক শূন্য এক পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য দুই শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৭৭২ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক দুই দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বা দশমিক ২২ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৯৬ দশমিক ৩৯ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএস৩০ সূচক তিন দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৩ শতাংশ কমে এক হাজার ৬৭৫ দশমিক ১০ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৫৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৯০টির, কমেছে ২৪৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২১ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি দুটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৩০৯ কোটি ১১ লাখ ১২ হাজার ৪৯১ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৩১২ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার ৫৪৪ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে তিন কোটি ৬৬ লাখ টাকা বা এক দশমিক ১৭ শতাংশ।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৫৪৫ কোটি ৫৫ লাখ ৬২ হাজার ৪৫৩ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল এক হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৭ লাখ ১২ হাজার ৭১৮ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে ১৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা বা এক দশমিক ১৭ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৫৯ হাজার ৩৩ কোটি ৭০ লাখ ৭১ হাজার টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৬১ হাজার ৯২ কোটি ৩৩ লাখ ৬০ হাজার ৮৩৩ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে দশমিক ৫৭ শতাংশ বা দুই হাজার ৫৮ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে জ্বালানি খাতের ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ১৫ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোতে থাকা মালেক স্পিনিংয়ের দর ১২ দশমিক ১৭ শতাংশ, আইটি কনসালটেন্টসের দর ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ, পদ্মা অয়েলের দর ১০ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডায়িংয়ের দর ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ, এ্যাসকোয়ার নিটের দর নয় দশমিক ৬৪ শতাংশ, আইপিডিসির দর ৯ দশমিক শূন্য এক শতাংশ, শাহাজালাল ইসলামী ব্যাংকের দর আট দশমিক ৭৩ শতাংশ, যমুনা অয়েলের দর আট দশমিক ৭৩ শতাংশ, কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজের দর আট দশমিক ২৪ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ৩৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ কমে সাপ্তাহিক দরপতনের শীর্ষে অবস্থান করে মুন্নু জুট স্টাফলার্স। সাফকো স্পিনিং মিলসের দর ২২ দশমিক ২২ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের দর ২১ দশমিক ৭১ শতাংশ, সিভিও পেট্রোকেমিক্যালের দর ১৭ দশমিক ১৯ শতাংশ, মিথুন নিটিংয়ের দর ১৫ শতাংশ, স্টাইল ক্রাফটের দর ১৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ, কপারটেকের দর ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ, বীকন ফার্মার দর ১৪ দশমিক শূন্য চার শতাংশ, ন্যাশনাল টিউবসের দর ১৩ দশমিক ৩১ শতাংশ ও জেনারেশন নেক্সটের দর ১৩ দশমিক ১৬ শতাংশ কমেছে।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো ন্যাশনাল টিউবস, গ্রামীণফোন, মুন্নু জুট স্টাফলার্স, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, স্টান্ডার্ড সিরামিক, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স, প্রিমিয়ার ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, সিলকো ফার্মা, প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্স।
অন্যদিকে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ৩০২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০০টির, কমেছে ১৮৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৯টির দর।
সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স বেড়েছে দশমিক ১৭ শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক দশমিক ১৬ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক বেড়েছে দশমিক ৮১ শতাংশ, সিএসআই সূচক কমেছে দশমিক ৩৪ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক বেড়েছে দশমিক ৪৪ শতাংশ।
সিএসইতে গেল সপ্তাহে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২১ কোটি ৯১ লাখ ১৬ হাজার ৩০৫ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭৫ কোটি ০৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।
১৬ দশমিক ১৫ শতাংশ বেড়ে সিএসইতে সাপ্তাহিক টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স। সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের দর ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের দর ১১ দশমিক ৬২ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের দর ১০ দশমিক ৭২ শতাংশ বেড়েছে। এরপরের অবস্থানগুলোতে থাকা বেঙ্গল উইন্ডসর থার্মোপ্লাস্টিকসের দর ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, প্রগ্রেসিভ লাইফের দর ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের দর ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ, গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রোর দর ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ, জনতা ইন্স্যুরেন্সের দর আট দশমিক ৮২ শতাংশ, রেকিট বেনকিজারের দর আট দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়েছে।