নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে মোট লেনদেন কমেছে ১৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ। দৈনিক গড় লেনদেনও কমেছে একই হারে। ডিএসইতে সবকটি সূচক নেতিবাচক হওয়ার পাশাপাশি বাজার মূলধন কমেছে দশমিক ৭৪ শতাংশ। কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর। গত সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়। এর মধ্যে দুদিন সূচকের পতন হয়, দুদিন ইতিবাচক ছিল। তবে উত্থানের চেয়ে পতনের হার বেশি ছিল। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচক ও বেশিরভাগ শেয়ারদর কমলেও লেনদেন বেড়েছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৪ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা এক দশমিক ১৬ শতাংশ কমে পাঁচ হাজার ৫০৫ দশমিক ৫০ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক দুই দশমিক ৯৭ পয়েন্ট বা দশমিক ২৩ শতাংশ কমে এক হাজার ২৮১ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএস ৩০ সূচক ২৪ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা এক দশমিক ২২ শতাংশ কমে এক হাজার ৯৬৮ দশমিক ৬৮ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৫২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৬টির, কমেছে ১৬৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৫ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি দুটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৩৬১ কোটি ৫১ লাখ ৪ হাজার ৫৭৭ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৪৩০ কোটি চার লাখ ১৯ হাজার ৪০৭ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৬৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা বা ১৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৪৪৬ কোটি চার লাখ ১৮ হাজার ৩০৮ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল এক হাজার ৭২০ কোটি ১৬ লাখ ৭৭ হাজার ৬৩০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে ২৭৪ কোটি ১২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা বা ১৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল চার লাখ ১৪ হাজার ৯০৭ কোটি ৩১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল চার লাখ ১১ হাজার ৮৫৬ কোটি ৫৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে দশমিক ৭৪ শতাংশ বা তিন হাজার ৫০ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর ১৪ দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোতে থাকা জেএমআই সিরিঞ্জের দর ১২ দশমিক ৭৮ শতাংশ, মুন্নু সিরামিকের দর ১২ দশমিক ২০ শতাংশ বেড়েছে। কে অ্যান্ড কিউ’র দর ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রোর দর সাত দশমিক ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ানের দর সাত দশমিক ১৪ শতাংশ, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লসের দর ছয় দশমিক ৬৮ শতাংশ, লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের দর ছয় দশমিক ৪৬ শতাংশ, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের দর ছয় দশমিক ২৬ শতাংশ ও এটলাস বাংলাদেশের দর ছয় দশমিক শূন্য তিন শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ২৭ দশমিক ১৮ শতাংশ কমে সাপ্তাহিক দরপতনের শীর্ষে অবস্থান করে সিঙ্গার বাংলাদেশ। ম্যারিকো বাংলাদেশের দর ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ১১ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ, ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্সড ফান্ডের দর ৯ দশমিক ২১ শতাংশ, ট্রাস্ট ব্যাংক আট দশমিক ৮৬ শতাংশ, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালের দর আট দশমিক ৬৭ শতাংশ, লাফার্জহোলসিমের দর আট দশমিক ৩৫ শতাংশ, রেকিট বেনকিজারের দর আট দশমিক ২৬ শতাংশ ও রেনউইক যজ্ঞেশ্বরের দর আট দশমিক ২৪ শতাংশ কমেছে।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো কে অ্যান্ড কিউ। এরপরের অবস্থানে ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, সিঙ্গার বাংলাদেশ, মুন্নু সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, গ্রামীণফোন, ব্র্যাক ব্যাংক, জেএমআই সিরিঞ্জ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি।
অন্যদিকে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৮০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৮টির, কমেছে ১৪৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৬টির দর।
সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স কমেছে এক দশমিক ৩৮ শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক কমেছে এক দশমিক ৩৩ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক এক দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে। সিএসই ৩০ সূচক কমেছে এক দশমিক ৫০ শতাংশ।
সিএসইতে গেল সপ্তাহে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৮ কোটি ৯৮ লাখ ৪২ হাজার ৫৯ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৫০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। লেনদেন বেড়েছে আট কোটি ১৩ লাখ টাকা।
১৩ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ বেড়ে সিএসইতে সাপ্তাহিক টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে সমতা লেদার। রেকিট বেনকিজারের দর ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়েছে। রংপুর ফাউন্ড্রির দর ১০ দশমিক ২৯ শতাংশ, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ডের দর ১০ শতাংশ বেড়েছে। এরপরের অবস্থানগুলোতে ছিল ম্যারিকো বাংলাদেশ, ফাইন ফুডস লিমিটেড, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, উত্তরা ফাইন্যান্স, মতিন স্পিনিং ও ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
অন্যদিকে টপ টেন লুজার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে নর্দান জেনারেল ইন্স্যুরেন্স। এরপরের অবস্থানগুলোতে ছিল আরামিট সিমেন্ট, মুন্নু সিরামিক, এমারাল্ড অয়েল, বিচ হ্যাচারি, তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, ঢাকা ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ভিএফএস থ্রেড, বেক্সিমকো লিমিটেড, বিএটিবিসি, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ম্যারিকো বাংলাদেশ, স্কয়ার ফার্মা, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, বিবিএস কেব্লস।

Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 5:37 pm
ডিএসইতে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১৫.৯৪%
পত্রিকা ♦ প্রকাশ: