নিজস্ব প্রতিবেদক: উভয় পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে লেনদেন কমার হার অব্যাহত ছিল। গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় চার কার্যদিবস। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে দুদিন সূচকের পতন হয় এবং তিন দিন উত্থান হয়। তবে উত্থানের চেয়ে পতনের হার বেশি ছিল। দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে দশমিক ২৮ শতাংশ। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ২৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ। সবগুলো সূচক ও বাজার মূলধন কমেছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সবকটি সূচক পতনের পাশাপাশি কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারের দর ও লেনদেন।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দশমিক ৬১ শতাংশ বা ৩৬ দশমিক ১৫ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৮৭০ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক তিন দশমিক শূন্য সাত পয়েন্ট বা দশমিক ২২ শতাংশ কমে এক হাজার ৩৭২ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসই ৩০ সূচক এক দশমিক ২৯ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ কমে দুই হাজার ১৬৮ দশমিক ৯৭ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৩৯টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ১১৩টির, কমেছে ২০৩টির ও অপরিবর্তিত ছিল ২২ কোম্পানির শেয়ার দর। লেনদেন হয়নি একটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৩৭৩ কোটি ৫৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৩২ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৩৭৪ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৬২৪ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে এক কোটি তিন লাখ টাকা বা দশমিক ২৮ শতাংশ।
অন্যদিকে সিএসইতে ২৭৪টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬২টির, কমেছে ২০০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১২টির দর।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৮৬৭ কোটি ৯৪ লাখ ৮১ হাজার ১৬০ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল এক হাজার ৪৯৮ কোটি ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার ৪৯৮ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার বেড়েছে ৩৬৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বা ২৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল চার লাখ ৯ হাজার ৫৭১ কোটি ৫১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল চার লাখ সাত হাজার ৮৪৬ কোটি ৪৫ লাখ ৬৬ হাজার ২৯২ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে দশমিক ৪২ শতাংশ বা এক হাজার ৭২৫ কোটি টাকা।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স কমেছে দশমিক ৯৭ শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক কমেছে দশমিক ৯৪ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক কমে দশমিক ৭৩ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক কমেছে দশমিক ৭৩ শতাংশ।
সিএসইতে গত সপ্তাহে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহে ছিল ১২৯ কোটি ৭৯ লাখ আট হাজার ৯২৪ টাকা। লেনদেন কমেছে ৪০ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে ‘এ’ ক্যাটেগরির ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোয় ছিল লিবরা ইনফিউশনস, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, বিডি ল্যাম্পস, ফিনিক্স ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, এপেক্স ফুড, আমরা নেটওয়ার্ক, এসিআই ফরমুলেশনস, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, মুন্নু সিরামিক।
অন্যদিকে ২৫ দশমিক ২৬ শতাংশ দর কমে জিএসপি ফিন্যান্সের। এর পরের অবস্থানে ছিল আইপিডিসি ফিন্যান্স, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ইসলামিক ফিন্যান্স, মাইডাস ফিন্যান্স, যমুনা ব্যাংক, জাহিন স্পিনিং ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলোÑস্কয়ার ফার্মা, ইফাদ অটোস, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, গ্রামীণফোন, বেক্সিমকো ফার্মা, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, মুন্নু সিরামিক, ফার্মা এইডস।
১৯ দশমিক ২১ শতাংশ দর বেড়ে সিএসইতে সাপ্তাহিক টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে বঙ্গজ লিমিটেড। এরপর রয়েছে কে অ্যান্ড কিউ, লিবরা ইনফিউশনস, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, সমতা লেদার, এসিআই ফরমুলেশনস, রহিমা ফুড, ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, এপেক্স ফুড, মুন্নু সিরামিক।
অন্যদিকে টপ টেন লুজার তালিকায় উঠে আসে জিএসপি ফিন্যান্স, আইপিডিসি ফিন্যান্স, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, আরামিট সিমেন্ট, মেঘনা লাইফ, প্রাইম ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল গ্রামীণফোন লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মা, কেয়া কসমেটিকস, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, বিবিএস কেব্লস, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, বেক্সিমকো, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, ন্যাশনাল ব্যাংক, নাহি অ্যালুমিনিয়াম।