নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহজুড়ে সবকটি সূচক ইতিবাচক থাকলেও মোট লেনদেন কমেছে। কারণ গত সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। দৈনিক গড় লেনদেনে বেড়েছে ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ। এর মধ্যে প্রথম কার্যদিবসে সূচক কমলেও শেষ তিন কার্যদিবস সূচক ইতিবাচক অবস্থানে ছিল। কমেছে বেশিরভাগ শেয়ারদর। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে মোট লেনদেন কমেছে ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ। সূচক পতনের তুলনায় উত্থানের হার অনেক বেশি ছিল। বাজার মূলধন বেড়েছে এক দশমিক ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেন ব্যাপক হারে বেড়েছে। তবে বেশিরভাগ শেয়ারদর কমেছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬১ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বা এক শতাংশ বেড়ে ছয় হাজার ২৪৪ দশমিক ৫২ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ২৪ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৩৯০ দশমিক ৬৭ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসই ৩০ সূচক ৫২ দশমিক শূন্য তিন পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে দুই হাজার ২৮৩ দশমিক ২৩ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৪০টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১২টির, কমেছে ২০২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৫ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি একটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৭২ লাখ ২৯ হাজার ৯৮১ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৪২৭ কোটি ৬৯ লাখ ৭৯ হাজার ২৩১ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৫০ কোটি দুই লাখ টাকা বা ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ।
অন্যদিকে সিএসইতে ২৭৭টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৭টির, কমেছে ১৮২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৮টির দর।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯১০ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ৯২৪ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল দুই হাজার ১৩৮ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ১৫৬ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে ২২৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বা ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল চার লাখ ১৮ হাজার সাত কোটি ৫১ লাখ আট হাজার টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল চার লাখ ২২ হাজার ৮৯৪ কোটি ৫৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪৬২ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে এক দশমিক ১৭ শতাংশ বা চার হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স কমেছে দশমিক ৭৯ শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক কমে দশমিক ৭৫ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক এক দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক কমেছে এক দশমিক ২৭ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক কমেছে দশমিক ৪০ শতাংশ।
সিএসইতে গত সপ্তাহে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩১৩ কোটি ১২ লাখ ৩৬ হাজার ৯২৫ টাকা, যা আগের সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে ১৭৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে টার্নওভার ছিল ১৩৭ কোটি ৯৪ লাখ ১২ হাজার ৯২৭ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর ২৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোয় ছিল রূপালী ব্যাংক, বিডি ল্যাম্পস, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ইসলামী ব্যাংক, ফার্মা এইডস, আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড, গ্রামীণ ওয়ান: স্কিম টু, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ।
অন্যদিকে ১৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ দর কমেছে এমারেল্ড অয়েলের। এর পরের অবস্থানে থাকা সাবোর্ডিনেট ২৫% কনভার্টেবল বন্ডস অব ব্র্যাক ব্যাংকের ১০ শতাংশ, রূপালী ইন্স্যুরেন্স সাত দশমিক ৭২ শতাংশ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের সাত দশমিক ৩৪ শতাংশ, বিবিএস কেবল্সের ছয় দশমিক ৭১ শতাংশ দরপতন হয়।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো লাফার্জ সুরমা, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, ইসলামী ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, সিটি ব্যাংক, প্যারামাউন্ট টেক্স, ব্র্যাক ব্যাংক, ন্যাশনাল টিউবস, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক।
সিএসইতে সাপ্তাহিক টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে নাহি অ্যালুমিনিয়াম, লাফার্জ সুরমা, বঙ্গজ, রূপালী ব্যাংক, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, বিডি ল্যাম্পস, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, গ্রামীণ মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান।
অন্যদিকে টপ টেন লুজার তালিকায় উঠে আসে এমারেল্ড অয়েল, ফার্স্ট ফিন্যান্স, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, ইয়াকিন পলিমার, এনসিসিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স, বিডি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স ও তুং হাই নিটিং।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল ব্যাংক এশিয়া, ইস্টার্ন ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, সাউথইস্ট ব্যাংক, লাফার্জ সুরমা, এক্সিম ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, প্রিমিয়ার সিমেন্ট ও ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স।