মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন করা গ্রাহকসংখ্যা। সবশেষ তথ্যমতে, মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করা বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ৩২ হাজার। ডিএসইর সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলেন, এই প্রক্রিয়ায় লেনদেন করা তুলনামূলকভাবে সহজ। এতে সময়ও বাঁচে, যে কারণে দিন দিন এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। বিষয়টি ইতিবাচক হিসাবে দেখছেন বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই। এটি ব্যবহারের ফলে বিনিয়োয়োগকারীরা বেশ উপকৃত হচ্ছেন। এর মাধ্যমে গ্রাহক নিজেই লেনদেন করতে পারেন। পাশাপাশি যে কোনো আর্থিক তথ্য দ্রুত তাদের কাছে পৌঁছে যায়। তাছাড়া দ্রুত ম্যানেজমেন্ট নোটিফিকেশন প্রদানের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা পোর্টফোলিও সম্পাদন এবং যে কোনো স্থান থেকে লেনদেনে অংশগ্রহণ করে তা সম্পন্ন করতে পারছেন।
সাধারণ বিনিয়োগকারীরা জানান, এটি ব্যবহার করে তারা বেশ উপকৃত হচ্ছেন। সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, যে কোনো জায়গা থেকে নিজেই লেনদেন করা যায়। মোবাইল অ্যাপ চালু হওয়ার আগে অনেক পোর্টফোলিও দেখার জন্য বিনিয়োগকারীদের ব্রোকারেজ হাউজে যেতে হতো। এখন যারা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করছেন, তারা যে কোনো স্থান থেকেই নিজেদের পোর্টফোলিও দেখতে পারেন। মোবাইল অ্যাপে লেনদেন করা ছাড়াও ডিএসই মোবাইল কর্নারে এ-সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।
তিন মাস আগে এই অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করা গ্রাহকের সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার বিনিয়োগকারী। বর্তমানে তা ৩২ হাজারে পৌঁছেছে।
মূলত গত বছরের শুরুর দিকে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পায় মোবাইল অ্যাপস, যার ফলে ২০১৭ সালের প্রথম চার মাসে গ্রাহকসংখ্যা বাড়ে প্রায় সাত হাজার। ওই বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করে এমন রেজিস্টার্ড গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ হাজার ৯৭৬ জনে। পরের আট মাসে যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গ্রাহকসংখ্যা হয় ২৩ হাজার ৮৬১। আর চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে আট হাজারের বেশি। বিনিয়োগকারীদের লেনদেন পদ্ধতি সহজ করার উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালের ৯ মার্চ দেশের প্রধান স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইতে সংযোজন করা হয় মোবাইল অ্যাপ। সেই সময় শুন্য গ্রাহক নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। ওই বছরের জুনেই তা দুই হাজার অতিক্রম করে। অক্টোবরে তা দ্বিগুণ হয়। ডিসেম্বরে মোবাইলে লেনদেনে গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়ায় ছয় হাজার।
নিজের পোর্টফোলিও দেখা ছাড়াও ডিএসই মোবাইল ফেসবুক পেজে এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা এটি সম্পর্কে অন্যান্য সব তথ্য জানতে পারেন। এ প্রসঙ্গে রাশেদুল ইসলাম নামে এক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিজকে বলেন, আগে যে কোনো কাজের জন্যই হাউজে যাওয়ার দরকার হতো। লেনদেন করার জন্য ফোন করলেও অনেক সময় কাক্সিক্ষত ব্যক্তিকে পাওয়া সম্ভব হতো না, যে কারণে অনেক সময় কাক্সিক্ষত দরে শেয়ার কেনা বা বিক্রি করা যেত না। মোবাইল অ্যাপ চালু হওয়ার পর এখন আর সেই সমস্যা নেই।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট শাকিল রিজভী বলেন, বিনিয়োগকারীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করেই ডিএসইতে মোবাইল অ্যাপ চালু হয়েছিল। ইতোমধ্যে আমরা আশানুরূপ সাড়া পেয়েছি। আশা করছি খুব দ্রুত এভাবে লেনদেনকারীর সংখা আরও বাড়বে। তিনি বলেন, এখন ডিজিটাল যুগ। পৃথিবীর সব দেশের পুঁজিবাজারই এখন ডিজিটাল। তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না।