নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে। প্রায় দুই মাস পুঁজিবাজার বন্ধ থাকার পর গত সপ্তাহে উভয় বাজারে আবার লেনদেন শুরু হয় এবং লেনদেনের শুরু থেকে বাজারে অস্বাভাবিক আচরণ দেখা যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকালও বাজারের মূলধন এবং সূচক কমেছে। গতকালও বেশিরভাগ শেয়ারের দর অপরিবর্তিত ছিল। বাকি শেয়ারের মধ্যে বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতন হয়। ডিএসইতে গতকাল শেয়ার কেনার চাপ ধারাবাহিকভাবে বাড়ার পাশাপাশি সূচকও ধীরে ধীরে নি¤œমুখী হতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত সূচকের গতি সামান্য ঊর্ধ্বমুখী হলেও বাজারের গতি পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট ছিল না। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক ও লেনদেন কমেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ কমে তিন হাজার ৯৫৬ দশমিক ১০ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক এক দশমিক ১৫ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ কমে ৯১৭ দশমিক ৪২ পয়েন্টে অবস্থান করে। অন্যদিকে ডিএস৩০ সূচক তিন দশমিক শূন্য আট পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ কমে এক হাজার ৩২৪ দশমিক ৯০ পয়েন্টে স্থির হয়।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয় ১০৬ কোটি ৩২ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৭০ কোটি দুই লাখ তিন হাজার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। এদিন তিন কোটি ৫৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬৮০টি শেয়ার ১১ হাজার ৬০ বার হাতবদল হয়। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন প্রায় ১৮১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ১০ হাজার ৩৭ কোটি ২৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকায়।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। কোম্পানিটির ১৩ কোটি আট লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর অপরিবর্তিত ছিল। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এক্সিম ব্যাংকের ছয় কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে ৩০ পয়সা। বেক্সিমকো ফার্মার ছয় কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে এক টাকা ৬০ পয়সা। এর পরের অবস্থানগুলোতে থাকা গ্রামীণফোনের তিন কোটি ৮১ লাখ টাকার, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের দুই কোটি ৮৪ লাখ টাকার, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের এক কোটি ৯৬ লাখ টাকার, সেন্ট্রাল ফার্মার এক কোটি ৯৫ লাখ টাকার, রেকিট বেনকিজারের এক কোটি ৯৪ লাখ টাকার, বেক্সিমকোর এক কোটি ৮৯ লাখ টাকার এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লের এক কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
দুই দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল ফিনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। রেকিট বেনকিজারের শেয়ারদর এক দশমিক ৮০ শতাংশ, ন্যাশনাল লঅইফ ইন্স্যুরেন্সের এক দশমিক ৩৮ শতাংশ, আমরা টেকনোলজিসের এক দশমিক ৩০ শতাংশ, দেশ গার্মেন্টের এক দশমিক ১১ শতাংশ, পূবালী ব্যাংকের শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ, এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কোম্পানি লিমিটেডের (প্রাণ) শূন্য দশমিক ৪৪ শতাংশ, ন্যাশনাল টির শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ এবং এম্বী ফার্মার শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে চার দশমিক ৩২ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে এসিআই ফরমুলেশনস লিমিটেড। এক্সিম ব্যাংকের দর তিন দশমিক ৩৩ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মার দর দুই দশমিক ৬১ শতাংশ, শাইনপুকুর সিরামিকের দর দুই দশমিক ৪৩ শতাংশ, একমি ল্যাবরেটরিজের দর দুই দশমিক ৩২ শতাংশ, সেন্ট্রাল ফার্মার দর দুই দশমিক ২৫ শতাংশ, বেক্সিমকোর দুই দশমিক ২২ শতাংশ, বেক্সিমকো সিনথেটিকসের দুই দশমিক ১২ শতাংশ, এসিআইয়ের দুই দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ এবং বাংলাদেশ জেনারলে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির এক দশমিক ৭০ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৬ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ কমে ছয় হাজার ৮১৬ দশমিক শূন্য আট পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১১ দশমিক ০২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ০৯ শতাংশ কমে ১১ হাজার ২৪৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। সিএসইতে ৯১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। দর বেড়েছে ১০টির, কমেছে ১৬টির এবং ৬৫টির দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে এক কোটি ৫১ লাখ ৪৬ হাজার ৭০১ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৮৮ হাজার ৪৬২ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে প্রায় আট কোটি ২৫ লাখ ৪১ হাজার টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। কোম্পানিটির ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। বেক্সিমকোর ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপর এক্সিম ব্যাংকের ১৪ লাখ টাকার, বাটা শুজের ১৪ লাখ টাকার, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের এক লাখ টাকার, এসিআইয়ের সাত লাখ টাকার, লিন্ডে বাংলাদেশের ছয় লাখ টাকার এবং বেক্সিমকো ফার্মার ছয় লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।