নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সোমবার সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে। এদিন বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। বাকি শেয়ারের মধ্যে বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমায় সূচক কমেছে। গতকাল বাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী গতি দেখা যায়, আধা ঘণ্টা পর থেকে শেষ পর্যন্ত বাজারের পতনের চিত্র দেখা গেছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৯ দশমিক ৯০ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২৪ শতাংশ কমে চার হাজার ৮৯ দশমিক ৫১ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক চার দশমিক ০২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়ে ৯৫০ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। অন্যদিকে ডিএস৩০ সূচক সাত দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৫৫ শতাংশ কমে এক হাজার ৩৭৬ দশমিক ০৭ পয়েন্টে স্থির হয়।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয় ৩৭৭ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৪৬ কোটি ৯৬ লাখ ৫১ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৩০ কোটি ৯৯ লাখ ১২ হাজার টাকার। এদিন ১১ কোটি ৯২ লাখ ৯৫ হাজার ১১২টি শেয়ার ৮৩ হাজার ৩০২ বার হাতবদল হয়।
এদিন মোট ৩৪৮টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৫৭টির ও কমেছে ১২৭টির। বাকি ১৬৪টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন এক হাজার ৪৮৪ কোটি ২৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ১৬ হাজার ৩৯৫ কোটি ৪৪ লাখ ৫৩ হাজার টাকায়।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। কোম্পানিটির ২০ কোটি ৪০ লাখ ৭৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর ৩০ পয়সা বেড়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ১৮ কোটি ৭২ লাখ ২৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারদর ৮০ পয়সা বেড়েছে। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ১২ কোটি ৮৫ লাখ ১৭ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারদর ২০ পয়সা কমেছে। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ১২ কোটি ২৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকার, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের ১১ কোটি ৮৩ লাখ ১৪ হাজার টাকার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি লিমিটেডের ১০ কোটি ৭৬ লাখ ১৯ হাজার টাকার, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ৯ কোটি ৫৬ লাখ ২৭ হাজার টাকার, গ্রামীণফোন লিমিটেডের আট কোটি ৪১ লাখ ৯৮ হাজার টাকার, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের আট কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার এবং এমএল ডায়িং লিমিটেডের আট কোটি ২০ লাখ ৪৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। জিকিউ বলপেন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ, হাক্কানী পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলস লিমিটেডের ৯ দশমিক ০৫ শতাংশ, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের আট দশমিক ৮১ শতাংশ, ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের আট শতাংশ, ফাইন ফুডস লিমিটেডের ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ, তাকাফুল ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের পাঁচ দশমিক ৮০ শতাংশ, নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পাঁচ দশমিক ১৭ শতাংশ, এডিএন টেলিকম লিমিটেডের চার দশমিক ৬৭ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। অন্যদিকে ছয় দশমিক ৯২ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে আরামিট সিমেন্ট লিমিটেড। এমএল ডায়িং লিমিটেডের দর ছয় দশমিক ৭২ শতাংশ, এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ডের পাঁচ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ঢাকা ডায়িংয়ের চার দশমিক ৪৪ শতাংশ, কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চার দশমিক ৩৫ শতাংশ, ফিনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের লিমিটেডের তিন দশমিক ৭৯ শতাংশ ও আইটি কনসালট্যান্টস লিমিটেডের তিন দশমিক ৭৭ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স চার দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ বেড়ে সাত হাজার ৩৩ দশমিক ৯২ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই পাঁচ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ০৫ শতাংশ বেড়ে ১১ হাজার ৬০৬ দশমিক ৭১ পয়েন্টে অবস্থান করে। সিএসইতে ২০১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। দর বেড়েছে ৪৩টির, কমেছে ৬৬টির এবং ৯২টির দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ৩০৬ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৫ কোটি ৩৬ লাখ ৫৭ হাজার ১৩৫ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে দুই কোটি ২০ লাখ ৯৮ হাজার ৮২৯ টাকার।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। কোম্পানিটির দুই কোটি ৩৮ লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা আইসিবি সোনালী ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের এক কোটি ৮০ হাজার টাকার এবং এর পরের অবস্থানে থাকা লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। বারাকা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ৭১ লাখ ৪০ হাজার টাকার, বাংলাদেশ স্টিল রি রোলিং মিলস লিমিটেডের ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকার, বেক্সিমকো ফার্মার ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ৪২ লাখ টাকার, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ৪১ লাখ ৩০ হাজার টাকার এবং এসএস স্টিলের ৪০ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।