নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহজুড়ে সূচকের উত্থান হলেও মোট লেনদেন ও দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে। মোট লেনদেন ও দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে এক দশমিক ১২ শতাংশ হারে। বেড়েছে বেশিরভাগ শেয়ারদর। বাজার মূলধন বেড়েছে দশমিক ৮৯ শতাংশ। গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়। আগের সপ্তাহেও পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়। এর মধ্যে চার দিন সূচকের উত্থান হয়। পতন হয় একদিন। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে(সিএসই) সূচক, শেয়ারদর ও লেনদেনে একই চিত্র দেখা গেছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৯ দশমিক শূন্য এক পয়েন্ট বা এক দশমিক ৯০ শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৭৭১ দশমিক ৯২ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ১৪ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৩১ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৮৯ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএস৩০ সূচক ৩০ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৬৫৭ দশমিক ৯২ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৫৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২২১টির, কমেছে ১১২টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২২ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি দুটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৩৩১ কোটি শূন্য দুই লাখ ৫৩ হাজার ৯২১ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৩৩৪ কোটি ৭৭ লাখ ৬১ হাজার ৫৩৬ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে তিন কোটি ৭৫ লাখ টাকা বা এক দশমিক ১২ শতাংশ।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৬৫৫ কোটি ১২ লাখ ৬৯ হাজার ৬০৬ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল এক হাজার ৬৭৩ কোটি ৮৮ লাখ সাত হাজার ৬৮১ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে
১৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বা এক দশমিক ১২ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৮ কোটি সাত লাখ ৯৬ হাজার টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল তিন লাখ ৫৯ হাজার ১১০ কোটি ২৯ লাখ ৬৫ হাজার ৩১০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে দশমিক ৮৯ শতাংশ বা তিন হাজার ১৭২ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে হাক্কানি পাল্প। সপ্তাহজুড়ে শেয়ারটির দর ৩৫ দশমিক শূন্য সাত শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোতে থাকা সুহƒদ ইন্ডাস্ট্রিজের ২০ দশমিক ৯৭ শতাংশ, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের ২০ দশমিক ২৫ শতাংশ, রিজেন্ট টেক্সটাইলের ২০ শতাংশ বেড়েছে। গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রোর দর ১৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ, আলহাজ্ব টেক্সটাইলের দর ১৮ দশমিক ২১ শতাংশ, শমরিতা হসপিটালের দর ১৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ, বসুন্ধরা পেপার মিলসের ১৭ শতাংশ, মাইডাস ফাইন্যান্সিংয়ের দর ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের দর ১৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ১৪ দশমিক ৬২ শতাংশ কমে সাপ্তাহিক দরপতনের শীর্ষে অবস্থান করে রহিম টেক্সটাইল লিমিটেড। ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের দর ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ, মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ, সিএপিএম আইবিবিএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ডের দর আট দশমিক ৮২ শতাংশ, বাটা শু কোম্পানির দর আট দশমিক ৫১ শতাংশ, মুন্নু জুট স্টাফলার্সের দর আট দশমিক ২৪ শতাংশ, স্টাইল ক্রাফটের দর সাত দশমিক ৯০ শতাংশ, ফ্যামিলি টেক্সের দর সাত দশমিক ৬৯ শতাংশ, আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড: ওয়ানের দর সাত দশমিক ৬৯ শতাংশ, ফার্স্ট ফাইন্যান্সের দর সাত দশমিক ৬৯ শতাংশ কমেছে।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো ন্যাশনাল টিউবস, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স, ব্র্যাক ব্যাংক, ভিএফএস থ্রেড ডায়িং, ফরচুন শুজ, সুহƒদ ইন্ডাস্ট্রিজ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, স্কয়ার ফার্মা, নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং, স্টাইল ক্রাফট।
অন্যদিকে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ৩০৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২০৮টির, কমেছে ৭৫ এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৫টির দর।
সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স বেড়েছে এক দশমিক ৭৬ শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক এক দশমিক ৮৩ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক বেড়েছে এক দশমিক ৪৮ শতাংশ, সিএসআই সূচক বেড়েছে এক দশমিক ৬১ শতাংশ। সিএসই ৩০ সূচক বেড়েছে এক দশমিক ২২ শতাংশ।
সিএসইতে গেল সপ্তাহে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪৮ কোটি ১২ লাখ ৫২ হাজার ২২৭ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১১৩ কোটি ৪৮ হাজার টাকা।
৩৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেড়ে সিএসইতে সাপ্তাহিক টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে বি ক্যাটেগরির স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক। মেট্রো স্পিনিংয়ের দর ২২ দশমিক ৬৪ শতাংশ, ইয়াকিন পলিমারের দর ২১ দশমিক ৭৩ শতাংশ, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের দর ১৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়েছে। এরপরের অবস্থানগুলোতে থাকা ভিএফএস থ্রেডের দর ১৭ দশমিক ২০ শতাংশ, মোজাফফর হোসেন স্পিনিংয়ের দর ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ, সুহƒদ ইন্ডাস্ট্রিজের দর ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশ, কপারটেকের দর ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ইভিন্স টেক্সটাইলের দর ১১ দশমিক ১১ শতাংশ, কুইন সাউথের দর ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়েছে।
অন্যদিকে ৪৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে টপ টেন লুজার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে ইনটেক লিমিটেড। এর পরের অবস্থানগুলোতে ছিল উসমানিয়া গ্লাস, তসরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, গোল্ডেন হার্ভেস্ট, বিডি থাই, শাইনপুকুর সিরামিক, সালভো কেমিক্যাল, জাহিন টেক্স, হাক্কানি পাল্প, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেড।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো সিলকো ফার্মা, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, ডরিন পাওয়ার, যমুনা ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, দি প্রিমিয়ার ব্যাংক, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, বেক্সিমকো লিমিটেড, রেকিট বেনকিজার ও ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো।
