নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। মোট লেনদেনও একই হারে কমেছে। গত সপ্তাহে লেনদেন হয় পাঁচ কার্যদিবস এবং আগের সপ্তাহেও লেনদেন হয় পাঁচ কার্যদিবস। এরমধ্যে সূচকের উত্থান হয় তিন দিন এবং কমেছে দুদিন। গত সপ্তাহে সবকটি সূচক ও বাজার মূলধন ইতিবাচক ছিল। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক ও লেনদেনে একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩০ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৫২ পয়েন্ট বেড়ে পাঁচ হাজার ৮৪৩ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ১২ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসই ৩০ সূচক ১৭ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৯ শতাংশ বেড়ে দুই হাজার ২০৪ দশমিক ১৭ পয়েন্টে স্থির হয়। মোট ৩৪২টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৯টির, কমেছে ১৮৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৮ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়নি একটির। দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৫১৪ কোটি ৯১ লাখ ৮৮ হাজার ২১০ টাকা। আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন হয় ৬২১ কোটি ৪৩ লাখ ৩০ হাজার ১৮৪ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ১০৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা বা ১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ।
অন্যদিকে সিএসইতে ২২৮টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৪টির, কমেছে ১২০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৪টির দর।
গেল সপ্তাহে ডিএসইতে মোট টার্নওভার বা লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় দুই হাজার ৫৭৪ কোটি ৫৯ লাখ ৪১ হাজার ৫০ টাকা। আগের সপ্তাহে যা ছিল তিন হাজার ১০৭ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৯১৯ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে টার্নওভার কমেছে ৫৩২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বা ১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বাজার মূলধন ছিল চার লাখ চার হাজার ৬১৫ কোটি ৪৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। শেষ কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল চার লাখ সাত হাজার ৭৩২ কোটি ছয় লাখ ৫৯ হাজার ৯৮১ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে দশমিক ৭৭ শতাংশ বা তিন হাজার ১১৬ কোটি টাকা।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স বেড়েছে দশমিক ৪৪ শতাংশ। এছাড়া সিএএসপিআই সূচক বেড়েছে দশমিক ৪১ শতাংশ, সিএসই৫০ সূচক বেড়েছে এক শতাংশ এবং সিএসআই সূচক বেড়েছে দশমিক ৯১ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক বেড়েছে দশমিক ১৬ শতাংশ।
সিএসইতে গেল সপ্তাহে টার্নওভারের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৩৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৭৬ কোটি ৯৫ লাখ ৮৬ হাজার ৮৭৯ টাকা। লেনদেন বেড়েছে ৫৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে সোনালি আঁশ। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির দর ২১ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়েছে। তালিকায় এর পরের অবস্থানগুলোতে ছিল কুইন সাউথ টেক্সটাইল, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস, দি পেনিনসুলা চিটাগাং, উসমানিয়া গ্লাস, এএমসি (প্রাণ), প্রাইম ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, এক্সিম ব্যাংক, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন।
অন্যদিকে ১৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ দর কমে অ্যাডভেন্ট ফার্মার। এরপরের অবস্থানে ছিল মার্কেন্টাইল ব্যাংক, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, ফাস ফিন্যান্স, নর্দান জুট, ফারইস্ট ফিন্যান্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, মাইডাস ফিন্যান্স, ফাইন ফুডস।
ডিএসইতে টার্নওভারের দিক থেকে শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলোÑবেক্সিমকো, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, উসমানিয়া গ্লাস, মুন্নু সিরামিক, স্কয়ার ফার্মা।
১৬ দশমিক ১৯ শতাংশ দর বেড়ে সিএসইতে সাপ্তাহিক টপ টেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে কুইন সাউথ টেক্সটাইল, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, দি পেনিনসুলা চিটাগাং, উসমানিয়া গ্লাস, শাইনপুকুর সিরামিকস, রেকিট বেনকিজার, এআইবিএল ফার্স্ট ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড, এগ্রিকালচারাল মার্কেন্টাইল কোম্পানি, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি। অন্যদিকে টপটেন লুজার তালিকায় উঠে আসে অ্যাডভেন্ট ফার্মা, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, শাশা ডেনিমস, শমরিতা হসপিটাল, ফাস ফিন্যান্স, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, সমতা লেদার, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, গ্রামীণফোন, বেক্সিমকো লিমিটেড, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, গ্রিন মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান, ব্র্যাক ব্যাংক, লাফার্জ হোলসিম, বাংলাদেশ স্টিল রি রোলিং মিলস, এসিআই, উসমানিয়া গ্লাস।