Print Date & Time : 24 June 2025 Tuesday 4:04 am

ডিএসইতে ৫৭% কোম্পানির দর বাড়লেও সূচক নেতিবাচক

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে গতকালও সূচকের পতন অব্যাহত ছিল।  ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল ৫৭ শতাংশের বেশি কোম্পানির দর বেড়েছে। তা সত্ত্বেও সূচক নেতিবাচক অবস্থানে চলে যায়। গতকাল লেনদেনের শুরুতে সূচকের সামান্য উত্থানের পরই বড় ধরনের পতন হয়। এরপর সামান্য উত্থান হয়ে প্রায় সমান্তরাল গতিতে চলতে থাকে। বেলা ১টার পর ধীরে ধীরে শেয়ার কেনার চাপ বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত ডিএসইএক্স সূচক এক দশমিক ৮৭ পয়েন্ট নেতিবাচক অবস্থানে চলে যায়। বাকি দুই সূচকও পতনে ছিল। গতকাল ডিএসইতে দরপতন হয় প্রায় ২৭ শতাংশ কোম্পানির।  চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে।      

বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এক দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বা দশমিক মূন্য চার শতাংশ কমে চার হাজার ৪১৭ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করে।

ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক আট দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৩ শতাংশ কমে ৯৮৬ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৯ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৩ শতাংশ কমে এক হাজার ৪৯৮ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন ৬৫২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৭ হাজার ৩৬৮ কোটি ৬২ লাখ টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ২৫৪ কোটি ৩৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৮১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এদিন ৯ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ৭৭৫ শেয়ার ৯৬ হাজার ৪৬৯ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২০৩টির, কমেছে ৯৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৫৬টির দর।

গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে স্কয়ার ফার্মা। ৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা লেনদেনের পাশাপাশি দর কমেছে চার টাকা ৩০ পয়সা। এরপর বীকন ফার্মার আট কোটি ৭৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা ১০ পয়সা। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির আট কোটি ১৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা ২০ পয়সা। রিং শাইন টেক্সটাইলের সোয়া আট কোটি টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৭০ পয়সা। স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের সাত কোটি ৪১ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে দুই টাকা ৩০ পয়সা। এছাড়া জেনেক্স ইনফোসিসের ছয় কোটি ৬০ লাখ টাকা, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্সের ছয় কোটি ৩৬ লাখ টাকা, এসএস স্টিলের চার কোটি ১৩ লাখ টাকা, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের তিন কোটি ৮৮ লাখ টাকা, ন্যাশনাল টিউবসের তিন কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।    

৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে আলহাজ্ব টেক্সটাইল। দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে সায়হাম কটন। দর বেড়েছে আট দশমিক ৫৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির আট দশমিক শূন্য তিন শতাংশ, গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রোর সাত দশমিক ৯৩ শতাংশ, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের সাত দশমিক ৭৯ শতাংশ, সায়হাম টেক্সটাইলের সাড়ে সাত শতাংশ, আনলিমা ইয়ার্নের সাত দশমিক ২৭ শতাংশ, জনতা ইন্স্যুরেন্সের সোয়া ছয় শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের ছয় দশমিক ১১ শতাংশ ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের দর ছয় শতাংশ বেড়েছে।     

এছাড়া পাঁচ দশমিক ৯২ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ। জুট স্পিনার্সের দর পাঁচ দশমিক ৭৫ শতাংশ, এমবি ফার্মার পাঁচ দশমিক ৬৬ শতাংশ, মুন্নু জুট স্টাফলার্সের চার দশমিক ৬০ শতাংশ, স্কয়ার টেক্সের চার শতাংশ, বিআইএফসির চার শতাংশ, প্রিমিয়ার সিমেন্টের তিন দশমিক ৮২ শতাংশ, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালের তিন দশমিক ৬৮ শতাংশ, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের তিন দশমিক ৫৩ শতাংশ ও স্টাইল ক্রাফটের দর তিন দশমিক ৫২ শতাংশ কমেছে।      

অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক  দশমিক শূন্য আট পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য শূন্য এক শতাংশ কমে আট হাজার ১৫১ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এক দশমিক ২১ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য শূন্য ৯ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৪৪০ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৩০ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৯টির, কমেছে ৭৭টির, অপরিবর্তিত ছিল ৩৪টির দর।

সিএসইতে এদিন ১২ কোটি ৩৬ লাখ ৬৩ হাজার ৩৫৫ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৪ কোটি ৬৩ লাখ ২৬ হাজার ৯৮১ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে দুই কোটি ২৬ লাখ টাকা।

সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে উত্তরা ব্যাংক। কোম্পানিটির তিন কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা কাট্টলী টেক্সটাইলের ৪৩ লাখ, আইএফআইসি ব্যাংকের ৪১ লাখ, জেনেক্স ইনফোসিসের ৩৩ লাখ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৩২ লাখ, বেক্সিমকোর ২৯ লাখ, ফরচুন শুজের ২৬ লাখ, বীকন ফার্মার ২৩ লাখ, বসুন্ধরা পেপার মিলসের সাড়ে ২১ লাখ, ইফাদ অটোসের ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।