নিজস্ব প্রতিবেদক: সূচকের বড় পতন দিয়ে চলতি সপ্তাহের লেনদেন শুরু হয়েছে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৭৭ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়। এতে ডিএসইর প্রধান সূচকের ৭৫ পয়েন্ট পতন হয়। বাকি দুই সূচকেরও পতন হয়। লেনদেনের শুরু থেকে সূচক নেমে যেতে থাকে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত বড় পতনের পরে সমান্তরাল গতিতে লেনদেন চলতে থাকে। শেষ সময়ে সূচক আরও কিছুটা নেমে যায়। সূচক পতনের পাশাপাশি লেনদেন নেমে এসেছে ৩৫০ কোটিতে। দর বেড়েছে মাত্র ১৫ শতাংশ কোম্পানির। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৫ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৬১ শতাংশ কমে চার হাজার ৫৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ১৪ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৩৭ শতাংশ কমে এক হাজার ৪১ দশমিক ২৯ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২২ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৪১ শতাংশ কমে এক হাজার ৫৮৩ দশমিক ০৫ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন চার হাজার ১৪০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪৮ হাজার ২৩৪ কোটি ০৫ লাখ টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৩৪৯ কোটি এক লাখ ৪৩ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৩২ কোটি ৪১ লাখ ৯৪ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৮৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এদিন ১৩ কোটি ৯৪ লাখ ৭৪ হাজার ১৭২টি শেয়ার এক লাখ ১৯ হাজার ২৮ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫৩টির, কমেছে ২৭৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৭টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে সাত টাকা ৭০ পয়সা। কোম্পানিটি দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে। এরপর সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে চার টাকা। ন্যাশনাল টিউবসের সাত কোটি ৭৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে তিন টাকা ১০ পয়সা। ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের সাত কোটি ৪৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৬০ পয়সা। লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের ছয় কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দরপতন হয় এক টাকা ১০ পয়সা। এছাড়া এসকে ট্রিমসের পাঁচ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের পাঁচ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, বীকন ফার্মার পাঁচ কোটি ৭১ লাখ টাকা, জেনেক্স ইনফোসিসের পাঁচ কোটি ৪২ লাখ টাকা এবং ওয়াটা কেমিক্যালের পাঁচ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
সিনোবাংলার পর সাত দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে আনলিমা ইয়ার্ন। হাক্কানি পাল্পের দর ছয় দশমিক ৬৫ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের দর পাঁচ দশমিক ২৬ শতাংশ, বসুন্ধরা পেপার মিলসের দর তিন দশমিক ৮৮ শতাংশ, বিডি অটোকারের দর তিন দশমিক ৮৫ শতাংশ, জেনেক্স ইনফোসিসের দর তিন দশমিক ১০ শতাংশ, হা-ওয়েল টেক্সের দর দুই দশমিক ৬৫ শতাংশ, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর দুই দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং বিএসআরএম স্টিলের দর দুই দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়েছে।
এছাড়া ১৪ দশমিক ৫২ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে রিজেন্ট টেক্স। ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের দর ৯ শতাংশ, এস্কয়ার নিটের দর আট দশমিক ৯২ শতাংশ, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের দর আট দশমিক ৭৫ শতাংশ, মোজাফফর হোসেন স্পিনিংয়ের দর আট দশমিক ৩৩ শতাংশ, খুলনা পাওয়ার কোম্পানির দর সোয়া সাত শতাংশ, ন্যাশনাল ফিড মিলের দর ছয় দশমিক ৮৬ শতাংশ, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের দর ছয় দশমিক ৮৪ শতাংশ, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের দর ছয় দশমিক ৬৬ শতাংশ ও নিউ লাইন ক্লোথিংয়ের দর ছয় দশমিক ৫৪ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ১৩৭ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৫৯ শতাংশ কমে আট হাজার ৪৮৫ দশমিক ৩০ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২২৩ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৫৭ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৯৭৯ দশমিক ৭০ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৩৯ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭টির, কমেছে ১৮৬টির ও অপরিবর্তিত ছিল ১৬টির দর।
সিএসইতে এদিন ১৪ কোটি ২৫ লাখ ৫৭ হাজার ৭০৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৫ কোটি ছয় লাখ ৪৯ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ১০ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে প্রগতি লাইফ। কোম্পানিটির তিন কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোতে থাকা বসুন্ধরা পেপার মিলসের ৮১ লাখ টাকার, ডরিন পাওয়ারের ৫২ লাখ, আরডি ফুডের ৩৯ লাখ, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের ৩৩ লাখ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের ৩১ লাখ, ফরচুন সুজের ২৬ লাখ, আইএফআইসি’র ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।