নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজার গতকাল বড় পতনের কবলে পড়েছে। প্রতিনিয়ত পতনের হার বেড়েই চলেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল ৭৯ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়। এতে করে প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের ৭৮ পয়েন্টের বেশি পতন হয়, যা শতাংশের হিসেবে পৌনে দুই শতাংশ। বাকি দুই সূচকও বড় পতনের কবলে পড়ে। গতকাল লেনদেনের শুরুতেই বিক্রির চাপ শুরু হয়। বিক্রির চাপ টানা চলতেই থাকে। সেই সঙ্গে সূচকের পতনও বাড়তে থাকে। শেষ ১০ মিনিটে হঠাৎ করে কেনার চাপ সামান্য বেড়ে যায়। তবে তা সূচকের বড় পতনে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। এদিন দর বেড়েছে মাত্র ৩৫টি বা প্রায় ১০ শতাংশ কোম্পানির। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৮ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে চার হাজার ৪১৯ দশমিক ৮২ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ২০ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে ৯৯৪ দশমিক ৭৮ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৩০ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে এক হাজার ৫০৮ দশমিক ২৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন এক দিনে পাঁচ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৮ হাজার ২১ কোটি ৩৯ লাখ টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ২৮১ কোটি ৫৬ লাখ ২২ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩০৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ২৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এদিন ১০ কোটি ৮৩ লাখ ৫৬ হাজার ১২৪টি শেয়ার এক লাখ ১১ হাজার ৬১৮ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৮ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৪টির, কমেছে ২৭৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৬৪টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে নতুন তালিকাভুক্ত রিং শাইন টেক্সটাইল। ১৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা লেনদেনের পাশাপাশি দর কমেছে এক টাকা ১০ পয়সা। এরপর বীকন ফার্মার ১৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে দুই টাকা ৬০ পয়সা। স্কয়ার ফার্মার সাত কোটি ১৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে তিন টাকা ৮০ পয়সা। স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের পাঁচ কোটি ৯৫ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ২৯ টাকা ২০ পয়সা। ব্র্যাক ব্যাংকের পাঁচ কোটি ৫৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৬০ পয়সা। এছাড়া খুলনা পাওয়ারের পাঁচ কোটি ৫৩ লাখ টাকার, জেনেক্স ইনফোসিসের পাঁচ কোটি ১৯ লাখ টাকার, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের চার কোটি ৬৯ লাখ টাকার, ন্যাশনাল টিউবসের চার কোটি ৪৪ লাখ টাকার ও গ্রামীণফোনের চার কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। আট দশমিক ১৯ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে আনলিমা ইয়ার্ন। দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে বীকন ফার্মা। দর বেড়েছে পাঁচ শতাংশ। স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ও রহিম টেক্সটাইলের দর চার দশমিক ৭২ শতাংশ, হাক্কানি পাল্পের দর চার দশমিক ৪২ শতাংশ, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের দর চার দশমিক ২৮ শতাংশ, অগ্নি সিস্টেমের দর চার দশমিক ১০ শতাংশ, জেনেক্স ইনফোসিসের দর তিন শতাংশ, আলহাজ্ব টেক্সটাইলের দর তিন শতাংশ ও গ্লাক্সোস্মিথক্লাইনের দর দুই দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়েছে।
এছাড়া ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে তুংহাই নিটিং ও জাহিন স্পিনিং। রিং শাইনের দর আট দশমিক ৯৫ শতাংশ, নিউ লাইন ক্লোথিংসের দর আট দশমিক ৪৩ শতাংশ, শ্যামপুর সুগারের দর সাত দশমিক ৪৪ শতাংশ, সায়হাম কটনের দর ছয় দশমিক ৯৬ শতাংশ, ঢাকা ডায়িংয়ের দর ছয় দশমিক ৬৬ শতাংশ, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্সের দর ছয় দশমিক ৩৭ শতাংশ, কপারটেকের দর ছয় দশমিক ৩১ শতাংশ ও সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের দর ছয় দশমিক ১৯ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ১৪৪ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৭৪ শতাংশ কমে আট হাজার ১৫১ দশমিক ৪৩ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৩২ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৭০ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৪৪১ দশমিক ৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৩০ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৫টির, কমেছে ১৭৩টির ও অপরিবর্তিত ছিল ২২টির দর।
সিএসইতে এদিন ১৪ কোটি ৬৩ লাখ ২৬ হাজার ৯৮১ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৯ কোটি ৭০ লাখ ২৮ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে পাঁচ কোটি সাত লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে জেনেক্স ইনফোসিস। কোম্পানিটির দুই কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোতে থাকা সামিট পাওয়ারের ৮৫ লাখ টাকার, বসুন্ধরা পেপার মিলসের ৪২ লাখ, ফরচুন সুজের ৩৬ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ৩৫ লাখ, লাফার্জহোলসিমের ৩৪ লাখ, বেক্সিমকোর ৩৩ লাখ, বীকন ফার্মার ২০ লাখ, সমতা লেদারের ১৯ লাখ ও আইএফআইসি ব্যাংকের সাড়ে ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।