নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে গতকাল ফের বড় পতন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৯৩ শতাংশ কোম্পানির দরপতনে ডিএসইএক্স সূচকের প্রায় ১৬৮ পয়েন্ট পতন হয়। এ নিয়ে টানা চার কার্যদিবস ধরে সূচকের বড় পতন হচ্ছে। গতকাল লেনদেন হয়েছে ৪২৯ কোটি টাকা। লেনদেনের শুরু থেকেই টানা পতন শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। তবে বেলা ১২টার পর পতনের গতি কমে আসে। বাকি দুই সূচকেরও বড় পতন হয়। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র দেখা গেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৬৮ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বা চার দশমিক ৪৬ শতাংশ কমে তিন হাজার ৬০৩ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে পৌঁছায়। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ৩৯ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বা চার দশমিক ৪৯ শতাংশ কমে ৮৩৪ দশমিক ৭৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। অন্যদিকে ডিএস৩০ সূচক ৬১ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা চার দশমিক ৮৭ শতাংশ কমে এক হাজার ২০৩ দশমিক ৪৩ পয়েন্টে স্থির হয়।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪২৯ কোটি তিন লাখ ৪০ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪০৬ কোটি ৬৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এদিন ১৭ কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ৩৪৯ শেয়ার এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯১ বার হাতবদল হয়। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন ১১ হাজার ৫১০ কোটি ৫২ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৩৮২ কোটি ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকায়। লেনদেন হওয়া ৩৫৬ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৩টির, কমেছে ৩৩৩টির, অপরিবর্তিত ছিল ১০টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে স্কয়ার ফার্মা। কোম্পানিটির ১৮ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর সাত টাকা ২০ পয়সা কমেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা গ্রামীণফোনের ১৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে সাত টাকা ৮০ পয়সা। মুন্নু সিরামিকের ১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে পাঁচ টাকা ৯০ পয়সা। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের আট কোটি ৮৭ লাখ টাকার, ওরিয়ন ফার্মার আট কোটি ১৭ লাখ টাকার, ব্র্যাক ব্যাংকের সাত কোটি ১৩ লাখ টাকার, বিএটিবিসির ছয় কোটি ৭৭ লাখ টাকার, খুলনা পাওয়ারের পাঁচ কোটি ৮৪ লাখ টাকার, বেক্সিমকোর পাঁচ কোটি ৪৮ লাখ ও সি পার্ল রিসোর্টের পাঁচ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
পাঁচ দশমিক ৪০ শতাংশ বেড়ে দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। প্রিমিয়ার লিজিংয়ের চার দশমিক ২৫ শতাংশ, ফাস ফাইন্যান্সের দুই দশমিক ৪৩ শতাংশ, ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্সড ফান্ডের দুই দশমিক ৪৩ শতাংশ, হা ওয়েল টেক্সের দুই দশমিক শূন্য দুই শতাংশ, মুন্নু সিরামিকের এক দশমিক ৩৩ শতাংশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের দশমিক ৮৪ শতাংশ, ইবনে সিনার দশমিক ৪৮ শতাংশ, আমরা টেকের দশমিক ৪৬ শতাংশ ও উত্তরা ব্যাংকের দর দশমিক ৪৩ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে ১০ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে উঠে আসে আইসিবি থার্ড এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড। এপেক্স স্পিনিংয়ের ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ, সি পার্ল রিসোর্টের ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ, কুইন সাউথ টেক্সটাইলের ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ, ইস্টার্ন কেব্লসের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, প্রগ্রেসিভ লাইফের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, ব্র্যাক ব্যাংকের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ, সোনারগাঁও টেক্সটাইলের ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ, শমরিতা হসপিটালের দর ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ২৭০ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বা তিন দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে ছয় হাজার ৭৪৬ দশমিক ৪২ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৪২ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা তিন দশমিক ৮২ শতাংশ কমে ১১ হাজার ১৩৩ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। সিএসইতে ২৪৮ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ১৯টির, কমেছে ২১৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১০টির দর। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৬০ লাখ ৫১ হাজার ২৪৩ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৩ কোটি ৩৮ লাখ ১১ হাজার ২৪৩ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে দুই কোটি ২২ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল জেনেক্স ইনফোসিস। কোম্পানিটির দুই কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এরপর এসএস স্টিলের ৫২ লাখ টাকার, বেক্সিমকোর ৪৮ লাখ টাকার, স্কয়ার ফার্মার ৪৯ লাখ টাকার, মুন্নু সিরামিকের সাড়ে ৩৮ লাখ টাকার, সেন্ট্রাল ফার্মার ৩৩ লাখ টাকার, ভিএফএস থ্রেডের ৩২ লাখ টাকার, এনবিএলের সাড়ে ২৮ লাখ টাকার, ব্র্যাক ব্যাংকের ২৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।