নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল প্রধান সূচক আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে। এর আগে ২৩ জুলাই ২০১৭ ডিএসইর প্রধান সূচক পাঁচ হাজার ৭৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করে। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে ২৬ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে সূচকটি সর্বোচ্চ ছয় হাজার ৩৩৬ পয়েন্টে উঠে আসে। এরপর আবার নামতে নামতে গতকাল পাঁচ হাজার ৭৭৪ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। বিক্রির চাপ বেশি থাকায় লেনদেন কমেছে। গতকাল লেনদেনের শুরুতে সূচকের পতন হয়। বেলা ১১টার পর কেনার চাপ এলে সূচক ঊর্ধ্বমুখী হলেও তা স্থায়ী হয়নি। এদিন মাত্র ৩৫০ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। শেষ পর্যন্ত ডিএসইএক্স সূচকের ৫৭ পয়েন্ট পতন দিয়ে লেনদেন শেষ হয়। সিএসইতে সবগুলো সূচক পতনের পাশাপাশি লেনদেন ও বেশিরভাগ শেয়ারদর কমেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫৭ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে পাঁচ হাজার ৭৭৪ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করে। ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ১২ দশমিক ৬৬ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৩ শতাংশ কমে এক হাজার ৩৪৮ দশমিক ৬৮ পয়েন্টে অবস্থান করে। আর ডিএস৩০ সূচক ১৪ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৯ শতাংশ কমে দুই হাজার ১২৭ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন কমে চার লাখ দুই হাজার ২৪ কোটি ২১ লাখ ১৫ হাজার টাকা হয়। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয় ৩৫০ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের দিন লেনদেন হয় ৩৮৪ কোটি চার লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৩৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এদিন সাত কোটি ৮৯ লাখ ৬২ হাজার ৪৩৮টি শেয়ার ৯১ হাজার ৪৭৫ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৩৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৮টির, কমেছে ২৪৯টির, অপরিবর্তিত ছিল ৪৭টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ। ২১ কোটি ৫২ লাখ টাকায় আট লাখ ২৮ হাজার ৫৮টি শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর দুই টাকা ৯০ পয়সা বেড়েছে। এর পরের অবস্থানে ছিল ইফাদ অটোস, স্কয়ার ফার্মা, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, ন্যাশনাল টিউবস, ইবনে সিনা, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, ব্র্যাক ব্যাংক ও গ্রামীণফোন। সর্বোচ্চসংখ্যক শেয়ার লেনদেনকারী কোম্পানিগুলোর মধ্যে শীর্ষে উঠে আসে কেয়া কসমেটিকস। কোম্পানিটির ২৫ লাখ ২২ হাজার ৫৫১টি শেয়ার লেনদেন হয়। শেয়ারটির দর অপরিবর্তিত ছিল। এর পরের অবস্থানে ছিল এনবিএল, জেনারেশন নেক্সট, ঢাকা ব্যাংক, লংকাবাংলা ফিন্যান্স, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, সুহƒদ ইন্ডাস্ট্রিজ, ইফাদ অটোস, এক্সিম ব্যাংক, ফু-ওয়াং ফুড।
চার দশমিক ১১ শতাংশ দর বেড়েছে এটলাস বাংলাদেশের। এরপর তিন দশমিক ৫৪ শতাংশ দর বাড়ে ফাইন ফুডসের। এসিআই’র দর তিন দশমিক ৩২ শতাংশ, আইপিডিসির দর তিন দশমিক ১৯ শতাংশ বাড়ে। পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সর দর বাড়ে দুই দশমিক ৯৫ শতাংশ।
অন্যদিকে ২৫ দশমিক ৬১ শতাংশ দর কমে পতনের শীর্ষে চলে আসে জিএসপি ফাইন্যান্স। রেকর্ড ডেটের পর দর সমন্বয় হয় কোম্পানিটির। এরপর সাত দশমিক ২০ শতাংশ দর কমে এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের। ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের দর ছয় দশমিক ৪০ শতাংশ কমেছে। সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের দর ছয় দশমিক ২১ শতাংশ, ইসলামিক ফিন্যান্সের দর পাঁচ দশমিক ৫৫ শতাংশ কমেছে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৯৭ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৭৭০ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৬৩ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট কমে ১৭ হাজার ৮৪৫ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২২২টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪টির, কমেছে ১৬০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৮টির দর।
সিএসইতে এদিন ১৫ কোটি ২৮ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৫ কোটি ২০ লাখ ৫৪ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা। লেনদেনের শীর্ষে ছিল এনবিএল। কোম্পানিটির প্রায় ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এছাড়া স্কয়ার ফার্মার ৫২ লাখ টাকার, বেক্সিমকোর ৫০ লাখ, আল-আরাফাহ্ ব্যাংক ৪৮ লাখ, কেয়া কসমেটিকস ৪৫ লাখ, লংকাবাংলা ফিন্যান্স ৪১ লাখ, গ্রামীণফোন ৩৮ লাখ, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৩৪ লাখ, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল ৩৪ লাখ, বিবিএস কেব্লসের ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।