নিজস্ব প্রতিবেদক: চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে চাল আমদানিতে শুল্ক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া চাল আমদানিতে রেগুলেটরি ডিউটি কমানো হয়েছে। ডিজেল ও অকটেনের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে ডিজেল আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে। গতকাল এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সই করা এ-সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাল ও ডিজেল আমদানিতে এ সুবিধা অব্যাহত থাকবে।
চালের আমদানি শুল্ক অব্যাহতি ও রেগুলেটরি ডিউটি কমানো সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কাস্টমস আইন, ১৯৬৯ অনুযায়ী শর্ত সাপেক্ষে চাল আমদানিতে আমদানি শুল্ক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। সিদ্ধ চাল ও আতপ চাল (সিদ্ধ নয়) আমদানিতে এ সুবিধা পাওয়া যাবে। চাল আমদানিতে এ রেয়াতি সুবিধা নিতে হলে চাল আমদানির আগে প্রত্যেক চালানের জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিতে হবে বলে প্রজ্ঞাপনের শর্ত দেয়া হয়। এ সুবিধা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের ২২ জুন শর্ত সাপেক্ষে চালের আমদানি শুল্ক অব্যাহতি ও রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন করে এনবিআর। এ সুবিধা চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। তবে গতকাল জারি করা প্রজ্ঞাপনে ২২ জুনের প্রজ্ঞাপনের সুবিধা বাতিল করা হয়েছে।
গতকাল খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার নওগাঁ সদর উপজেলা মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় বলেন, বাজারে চালের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য আমদানি শুল্ক আরও কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ১০ শতাংশ কমিয়ে আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ করে আজ রাতে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। প্রজ্ঞাপন জারির পর পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ শুল্কে চাল আমদানি করা যাবে।
অন্যদিকে, ডিজেলের আগাম কর অব্যাহতি ও আমদানি শুল্ক কমানো-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কাস্টমস আইন, ১৯৬৯ অনুযায়ী ডিজেল আমদানিতে আগাম কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
এনবিআর সূত্রমতে, কৃষি ও শিল্প উৎপাদন নিশ্চিত করতে জ্বালানি তেল ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে চাল আমদানির শুল্ক কমানো হয়েছে। জ্বালানি তেল আমদানির বিদ্যমান শুল্ক ৩৪ থেকে কমিয়ে ১০ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। আর চাল আমদানিতে শুল্ক ২৫ দশমিক ৭৫ থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে ১৫ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। গত ৬ আগস্ট দেশের বাজারে কেরোসিন ও ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা, পেট্রোলের দাম লিটারে ৪৪ টাকা ও অকটেনের লিটারে ৪৬ টাকা বাড়ানো হয়। ভোক্তাপর্যায়ে খুচরা মূল্য প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪, অকটেন ১৩৫ ও পেট্রোল ১৩০ টাকা করা হয়। সর্বশেষ ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হয়। সে সময় এ দুই জ্বালানি তেলের দাম লিটারপ্রতি ৬৫ থেকে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়; তবে ওই সময় পেট্রোল আর অকটেনের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল। জ্বালানি তেলের দাম হঠাৎ অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পর দেশের ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগসহ (সিপিডি) বিশেষজ্ঞরা জ্বালানি তেলের করহার কমানোর দাবি জানিয়ে আসছে।