ডিপিডিসির ২৫০০ কোটি টাকার শেয়ার যাচ্ছে পিডিবির কাছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০০৮ সালে বিলুপ্ত হয় ঢাকা শহরে বিদ্যুৎ বিতরণকারী কর্তৃপক্ষ ডেসা। সে সংস্থার কাছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) পাওনা ছিল প্রায় দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এক দশকেও সে পাওনা আদায় হয়নি। যদিও বকেয়া আদায়ে ডেসা থেকে রূপান্তরিত ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) কাছে বারবার তাগিদ দিয়ে আসছিল পিডিবি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঋণটি মূলধনে রূপান্তর করে পিডিবির কাছে হস্তান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরের জুনের মধ্যে ডিপিডিসির দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকার শেয়ার পিডিবির কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ করার কথা রয়েছে।
তথ্যমতে, বিভিন্ন উৎপাদনকারী কেন্দ্র থেকে কেনা বিদ্যুতের বড় অংশ সরবরাহ করা হয় ঢাকা শহরে। তবে বিক্রীত এ বিদ্যুতের অর্থ পিডিবিকে নিয়মিত পরিশোধ করত না তৎকালীন ডেসা। ঢাকার দক্ষিণাংশে বিদ্যুৎ বিতরণ করত সংস্থাটি। ফলে ২০০৮ সালের জুন পর্যন্ত ডেসার কাছে পিডিবির পাওনা দাঁড়ায় দুই হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা।
এদিকে লোকসান কমানো ও অব্যবস্থাপনা বন্ধে দাতা সংস্থার চাপে ডেসা বিলুপ্ত করে সে স্থলে গঠিত হয় কোম্পানি। সে সময় ডেসার সব সম্পদ ও দায় হস্তান্তর করা হয় ডিপিডিসিকে। এরপর পেরিয়ে গেছে প্রায় ১০ বছর। এ সময়ে পিডিবির বকেয়ার মাত্র ২০০ কোটি টাকা পরিশোধ করে ডিপিডিসি।
বকেয়া আদায়ে ডিপিডিসিকে কয়েক দফা চিঠি দিয়েছে পিডিবি। তবে এর নিষ্পত্তি হয়নি। সম্প্রতি বিষয়টি সমাধানে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ চায় পিডিবি। এর পরিপ্রেক্ষিতে আন্তঃসংস্থা বৈঠক আহ্বান করা হয়।
এতে বলা হয়, যাত্রা শুরুর পর থেকে বিদ্যুৎ কেনার বিল নিয়ে পিডিবি ও ডিপিডিসির মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এতে প্রতি বছরই কিছু কিছু বিল বকেয়া পড়তে থাকে। এতে ডিপিডিসির কাছে গত ৯ বছরে প্রায় এক হাজার ৩০০ কোটি টাকা বকেয়া জমে গেছে। এছাড়া ডেসার প্রায় দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়ে গেছে, যা পরিশোধ করতে পারছে না ডিপিডিসি।
বৈঠকে পিডিবি যুক্তি দেয়, ডিপিডিসির দায়কে মূলধনে রূপান্তর করে পিডিবির কাছে হস্তান্তর করা যেতে পারে। এতে একদিকে পিডিবির দায় পরিশোধ হবে; অন্যদিকে ডিপিডিসির মুনাফার অংশ থেকে পিডিবির আয়ও হবে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ডেসার দায়কে মূলধনে রূপান্তর করে সে বাবদ শেয়ার পিডিবির কাছে হস্তান্তর করা হবে। চলতি অর্থবছরের জুনের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। আর নতুন বকেয়া নিয়ে সমস্যা সমাধানে একটি কমিটি করা হবে। তারা বৈঠকের মাধ্যমে পাওয়ার ফ্যাক্টর সমস্যার সমাধান করবে।
এ প্রসঙ্গে পিডিবির মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক পরিচালন) মো. কাওসার আমীর আলী শেয়ার বিজকে বলেন, ডেসার বকেয়া সমাধানে অনেক দিন ধরে চেষ্টা চলছে। এজন্য উভয় সংস্থার কর্মকর্তারা একাধিকবার বৈঠক করেন। তবে ডেসার দায় ডিপিডিসি বহনে রাজি ছিল না। সর্বশেষ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটির মূলধন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এতে ডেসার দায়কে মূলধনে রূপান্তর করে শেয়ার হিসেবে পিডিবির কাছে হস্তান্তর করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ডিপিডিসির নিজস্ব বিদ্যুৎ বিলেও কিছু বকেয়া ছিল। সে সমস্যাও সমাধান হয়ে গেছে। কোম্পানিটি এখন নিয়মিত বিল পরিশোধ করছে।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০