ডিভাইস খুঁজে দেবে চোরাই গাড়ি

কামরুল সাহেবের সিএনজিচালিত অটোরিকশার ব্যবসা রয়েছে। বর্তমানে তার গ্যারেজে এর সংখ্যা ২৫। মাঝেমধ্যে চুরি কিংবা ছিনতাইয়ের শিকারে পরিণত হয় তার যানবাহন। কখনও কখনও মুক্তিপণ দিয়ে ফেরত পান, কখনও পান না। এই ঝামেলা থেকে রেহাই পেতে বছরের মে মাসে সব অটোরিকশায় জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইস ইনস্টল করেন। ব্যস। এর সুফল যে এত দ্রুত পাবেন, তা ভাবেননি তিনি। কেননা জুন ও জুলাইয়ে তার তিনটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা চুরি হলে কোনো পণ ছাড়াই জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সবগুলো উদ্ধার করতে সক্ষম হন।

শাফিনুর আজনান সাহেবের গল্পটা একটু ভিন্ন। তার ড্রাইভার প্রায়ই সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গ্যাস আনতে গিয়ে বিশাল লাইনের অজুহাত দেখান। এমনই এক রাতে ড্রাইভারের ভাষ্যমতে, গাড়ি গ্যাস নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ানো। শাফিনুর সাহেব গাড়ির লোকেশন ট্র্যাক করে দেখলেন এয়ারপোর্ট সিগন্যালে দাঁড়িয়ে আছে তার গাড়ি। অথচ তার জানামতে কোনো সিএনজি স্টেশন নেই ওখানে। সন্দেহ হওয়ায় ভয়েস ট্র্যাকিং অপশনের মাধ্যমে কল করলেন গাড়িতে আর ড্রাইভারের গলার আওয়াজে শুনতে পেলেন ‘মহাখালী ২০ টাকা’, ‘মহাখালী ২০ টাকা’। বুঝতে আর কিছুই বাকি রইলো না শাফিনুর সাহেবের।

এভাবেই ফাইন্ডার ট্র্যাকিং সার্ভিস কাজ করে যাচ্ছে ২০০৯ সাল থেকে। এই সেবা উপভোগ করার জন্য গাড়িতে একটি ট্র্যাকিং ডিভাইস ইনস্টল করতে হয়। ডিভাইসটিতে একটি মোবাইল সিম থাকে, যা জিপিএস

প্রযুক্তির মাধ্যমে যানবাহনের তাৎক্ষণিক অবস্থান আপডেট করতে থাকে ফাইন্ডার সার্ভারে। ব্যবহারকারীরা ফাইন্ডার ওয়েবসাইট িি.িভরহফবৎ-ষনং.পড়স অথবা মোবাইল অ্যাপ থেকে তার গাড়ির অবস্থান, গতি ও অতিক্রান্ত দূরত্বসহ আরও নানা ধরনের রিপোর্ট উপভোগ করে থাকেন। শুধু তা-ই নয়, দিন ও রাতের যে কোনো সময় কাস্টমার কেয়ারে ফোন করে অথবা পুশ পুল এসএমএসের মাধ্যমেও পাওয়া যায় এ ধরনের সেবা। যে কোনো ধরনের গাড়ির পাশাপাশি মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, বাস, ট্রাক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, এমনকি নৌযানেও ব্যবহার করা যায় এই ডিভাইস।

চোরাই গাড়ি উদ্ধার করা ছাড়াও এই ট্র্যাকিং সার্ভিস গাড়ির নিরাপত্তা ও সঠিক ব্যবস্থপনা নিশ্চিত করে। এই সাভির্সের মাধ্যমে ব্যবহারকারী খুব সহজে ড্রাইভারের সারাদিনের কার্যক্রম ও অতিক্রান্ত দূরত্ব দেখতে পারবেন। এমনকি ইচ্ছা হলে গাড়ির ভেতরের কথাবার্তাও শুনতে পারবেন। এছাড়া এতে আছে জিও-ফেন্স সুবিধা যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট এলাকায় গাড়িটি ঢুকলে বা বের হলে সঙ্গে সঙ্গে নোটিফিকেশন চলে যাবে ব্যবহারকারীর কাছে।

আফটার সেলস সার্ভিস এই সেবার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। সেবাটি নিশ্চিত করতে ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও যশোরেও রয়েছে ফাইন্ডারের নিজস্ব অফিস। এ ছাড়া মোবাইল টেকনিশিয়ান টিম রয়েছে সারা দেশে সেবা দেওয়ার জন্য।

গত দুই মাসে প্রায় আটটি গাড়ি, মোটরবাইকসহ মাইক্রোবাস উদ্ধার হয়েছে এ ডিভাইসটি ব্যবহার করে। চোরও ধরা পড়েছে।

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০