Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 5:12 pm

ডিম খান, ডিম!

ডিম প্রোটিনসমৃদ্ধ একটি খাবার। ছোট-বড় সবার পছন্দের। সহজলভ্য পুষ্টির উৎস হিসেবে ডিমের তুলনা নেই। বাড়ি বা রেস্তোরাঁয় সকাল ও বিকালের নাস্তা কিংবা দুপুর বা রাতের খাবারে ডিমের জুড়ি নেই। ডিমের দুটি অংশ রয়েছে সাদা ও হলুদ।

পুষ্টিগুণ
ভিটামিন ‘সি’ ছাড়াও প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন বি২, টোটাল ফ্যাট, ওমেগা-৩ ফ্যাটস, ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে, ক্যারোটিনয়েডস, ভিটামিন বি৫, বি৬, বি১২, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, কপার, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন বি১, বায়োটিন, সোলিনিয়াম প্রভৃতি রয়েছে ডিমে।

উপকারিতা

এলডিএল কোলেস্টেরলকে মন্দ কোলেস্টেরল হিসেবে বলা হয়। এটি ডিম খেলে কমে যায়। তাই ডিম খাওয়ায় হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে না বরং কমে যায়

দেহে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল ক্ষতি করে এমনটা অনেকেই জানেন। কিন্তু কোলেস্টেরলে ভালো ও মন্দ উভয় দিক রয়েছে। মূলত মন্দ কোলেস্টেরল দেহের ক্ষতি করে। ডিমে রয়েছে ভালো কোলেস্টেরল। এটি দেহের মন্দ কোলেস্টেরল দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে

ডিম দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। ভাইরাস ও বিভিন্ন রোগের জীবাণুকে দূর করতে নিয়মিত ডিম খান। একটি ডিমে প্রায় ২২ শতাংশ আরডিএ বা সেলেনিয়াম রয়েছে। এটি শিশুর পুষ্টি চাহিদা মেটাতে বিশেষভাবে কার্যকর, যা তাদের বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে

একটি ডিমে রয়েছে দৈনিক চাহিদা পূরণের ১৫ শতাংশ ভিটামিন বি। প্রতিদিন খেলে দেহের ভিটামিন বি’র চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখে। এ ভিটামিন দেহে এনার্জি জোগায়। এ কারণে শক্তি জোগাতে ডিমের তুলনা হয় না

ভিটামিন বি থাকায় সুস্থ চুল, ত্বক, চোখ ও লিভার গঠিত হয়। এটি ছাড়াও ডিমে রয়েছে নানা ভিটামিন। এসব ভিটামিন দেহের নার্ভাস সিস্টেম ও মাংসপেশির উন্নতি করে

ডিম মস্তিষ্কের প্রচুর উন্নতি ঘটায়। এতে রয়েছে মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, যার নাম কোলিন। গবেষণায় দেখা গেছে, কোলিনের অভাবে মস্তিষ্কের নানা সমস্যা দেখা দেয়

মানুষের দেহে ২০ ধরনের অ্যামাইনো এসিডের প্রয়োজন হয়। দেহ এর মধ্যে ১১ ধরনের বানাতে পারলেও বাকি ৯ ধরনের অ্যামাইনো এসিড ডিম তৈরি করে। এটি জীবন ধারণের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে

মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে ভূমিকা রাখে

ডিমে দুটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে লুটেইন ও জিয়ানথিন। এগুলো চোখের জন্য উপকারী। ডিমের কুসুমে এ উপাদানগুলো পাওয়া যায়। তাই কুসুমসহ ডিম খাওয়া উত্তম

ডিমের উপাদান হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সহায়তা করে। ডিম প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি’র উৎস। এটি ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে সহায়তা করে

ডিমে আছে ভিটামিন ই। এটি কোষ ও ত্বকে উৎপন্ন ফ্রি র‌্যাডিক্যাল নষ্ট করে। স্কিন ক্যানসার প্রতিরোধ করে

গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন একটি অথবা দুটি ডিম খাওয়া উচিত। তাহলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকে না

যেসব মহিলা সপ্তাহে কমপক্ষে ছয়টি ডিম খায়, তাদের ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কমে যায়

গবেষণায় দেখা গেছে, একজন নারীর শরীরে রোজ কমপক্ষে ৫০ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন। একটি ডিমে ৭০ থেকে ৮৫ ক্যালোরি বা ছয় দশমিক পাঁচ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে

অনেকের ধারণা, হাঁসের চেয়ে মুরগির ডিম অধিক পুষ্টিকর। আসলে হাঁসের চেয়ে মুরগির ডিম সুস্বাদু হলেও পুষ্টিগুণ বিবেচনায় উভয়ই সমান।

শিপন আহমেদ