Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 11:38 pm

ডিসিদের ২৫ নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর

শেয়ার বিজ ডেস্ক: জনগণের জন্য কতটুকু কার্যকর হবে সেটি বিবেচনায় কেবল ‘প্রয়োজনীয়’ প্রকল্প গ্রহণ করতে ডিসিদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে সরকারি তহবিল ব্যবহারে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের তিনি কৃচ্ছ্র সাধনের কথাও বলেছেন। সূত্র: বাসস।

সরকারের মেয়াদের শেষ বছরের শুরুতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা দিতে গতকাল মঙ্গলবার সকালে তিন দিনব্যাপী ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। তেজগাঁওয়ের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন তিনি। সেখানে তিনি খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন। পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে ব্যবস্থা নেয়াসহ ২৫ দফা নির্দেশনা এসেছে সরকার প্রধানের কাছ থেকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডিসিদের বিবেচনা করতে হবে, যখনই কোনো প্রকল্প নেয়া হয়, সেটা ওই এলাকার জন্য কতটুকু কার্যকর। এতে মানুষ কতটুকু লাভবান হবে এবং অপচয় কতটুকু বন্ধ করা যায়, সেদিকে আপনাদের নজরদারি থাকা উচিত। যেহেতু একটা জেলার দায়িত্ব আপনাদের ওপর। স্বাভাবিকভাবে এগুলো আপনারা দেখবেন। কারণ যত্রতত্র শুধু পয়সা খরচের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা আমি পছন্দ করি না।

কভিড মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের যেন সেটা মোকাবিলা করতে না হয় সেজন্যই আমরা কৃচ্ছ্র সাধনের ঘোষণা দিয়েছি। আমাদের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে ফেলেছি এবং সে ব্যাপারেও আপনারা সচেতন থাকবেন।’

বৈশ্বিক পরিস্থিতি আর আর্থিক সংকটের বিবেচনায় ২ লাখ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার নতুন প্রকল্প আপাতত স্থগিতের কথাও সম্মেলনে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আর্থিক সংকট অবশ্যই সারা বিশ্বের মতো আমাদেরও আছে। কিন্তু এমন পর্যায়ে নেই যে আমরা চলতে পারব না। আমাদের অগ্রাধিকার আমাদেরই বিবেচনা করতে হবে।

মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সরকারে অগ্রাধিকারে রয়েছে বলেও জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘মানুষের

কল্যাণের কথা বিবেচনা করে আমাদের কৃষি উৎপাদন যাতে বাড়ে সে জন্য যা খরচ লাগে আমরা করব।’

জনকল্যাণমূলক কাজে বিনা খরচে করোনাভাইরাসের টিকা দিতে সরকারের হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের উদাহরণ দেন প্রধানমন্ত্রী। কার্গো বিমান কেনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেদের জন্য কার্গো বিমান কেনার পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। কিন্তু অর্থনৈতিক এ অবস্থায় কিনতে পারছি না। ভবিষ্যতে কিনব পরিকল্পনা আছে।’

ডিসিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একটা কথাই বলব, আমি আসার (ক্ষমতায়) পর আমাদের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে এই যে জনমুখী বা জনগণের পাশে দাঁড়ানোর বা জনগণকে সেবা দেয়ার যে একটা আন্তরিকতা থাকা উচিত, সে আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়েছে, এই পরিবর্তন আমি দেখেছি আপনাদের মাঝে। আর সেটা যদি না হতো… আমরা জনপ্রতিনিধিরা একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্যই ক্ষমতায় আসি।’

মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ, অগ্নিসন্ত্রাস বা গাছকাটা মোকাবিলায় মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরুল্লাহ এবং ডিসিদের পক্ষে সম্মেলনে বক্তব্য দেন নরসিংদীর ডিসি আবু নাঈম মোহাম্মদ মারুফ খান ও বান্দরবানের ডিসি ইয়াসমিন পারভিন তিবরিজি। অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি দেখানো হয়।