কৃষিতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রধান সমস্যা অর্থায়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষি খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) জন্য মূল সংকট হচ্ছে অর্থায়নের অভাব। এছাড়া কৃষিপণ্য সংরক্ষণে প্রাতিষ্ঠানিক ও কারিগরি দক্ষতার অভাব, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সম্পত্তির মালিকানা না থাকা, আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থা কৃষি খাতে এসএমই শিল্প বিকাশের জন্য চ্যালেঞ্জ। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিসিসিআই মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

এগ্রি বিজনেস বুস্টার বাংলাদেশের (এবিবি) সহায়তায় ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং ইউএসএআইডি এগ্রিকালচার ভ্যালু চেইন প্রোগ্রাম (ডাই) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। ‘কৃষি খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা বিকাশে ঋণ সহায়তা প্রদানে প্রতিবন্ধকতা ও সমাধান’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের ৯০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এসএমইভিত্তিক। বাংলাদেশের ৭৫ শতাংশ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হয় এসএমই থেকে। তাই কৃষি খাতে এসএমইর বিকাশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা দরকার।

ডিসিসিআই সহ-সভাপতি হোসেন এ সিকদার কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিসিসিআই’র প্রাক্তন সহ-সভাপতি ও ডিসিসিআই-ডাই প্রজেক্টের টিম লিডার মো. শোয়েব চৌধুরী। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিসিসিআই পরিচালক ইমরান আহমেদ, ইন্টারচার্চ অর্গানাইজেশন ফর ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশনের (আইসিসিও) কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ টিসা সেমেলজার, এগ্রি বিজনেস বোস্টার বাংলাদেশের লিড প্রতিনিধি নাবা নাশিত তারেক, বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ফকরুল ইসলাম মুন্সী, ঢাকা চেম্বারের মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবিরসহ বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিডা) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিসিসিআই সহ-সভাপতি হোসেন এ সিকদার বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষি খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। এ খাতের উদ্যোক্তাদের সময়মতো ও প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। প্রথাগত ঋণ সহায়তা নিশ্চিত না হওয়ায় দেশের কৃষি খাত এখনও কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি।’

তিনি কৃষি খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল’ ও ‘প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ড’ গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এর মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের পণ্য আহরণ, উৎপাদান ও বাজার ব্যবস্থাপনা সচল রাখা সহজ হবে।’

ডিসিসিআই’র পরিচালক ইমরান আহমেদ বলেন, কৃষিসহ অন্যান্য খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মাধ্যমে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসতে হবে।

পর্যাপ্ত কোল্ডস্টোরেজ সুবিধা না থাকায় বাংলাদেশে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ কৃষিপণ্য নষ্ট হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন আলোচকরা। এজন্য আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি কৃষিপণ্য বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

আইসিসিও বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ টিসা সেমেলজার বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষি খাতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বিশ্বায়নের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য সক্ষমতা তৈরি করা দরকার।’

এগ্রি বিজনেস বোস্টার বাংলাদেশের লিড প্রতিনিধি নাবা নাশিত তারেক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এতে তিনি বলেন, এগ্রি বিজনেস বোস্টার বাংলাদেশ এদেশের উদীয়মান কৃষি উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন মেয়াদে ইকুইটি ইনভেস্টমেন্ট ও ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা প্রদানে আগ্রহী। এজন্য উদ্যোক্তাদের ধারণাপত্র উপস্থাপনের আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ফকরুল ইসলাম মুন্সী বলেন, কৃষি উৎপাদান বাড়াতে এবং উদ্ভাবনী কৃষিপণ্য উৎপাদনে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ডিসিসিআই মহাসচিব এএইচএম রেজাউল কবির বলেন, দেশের দারিদ্র্য বিমোচনে আমাদের অবশ্যই কৃষি খাতের উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি প্রান্তিক কৃষকদের উন্নয়নের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০