নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে মন্তব্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এই সরকার থাকবে না। দেশের একটা মানুষও বিশ্বাস করে না এই সরকার থাকবে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সরকার থাকবে।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পুলিশ চাকরি করে তারা হয়তো বলতে পারে না। পেশাজীবীরা হয়তো বলতে পারে না। কিন্তু একটা কথা দিবালোকের মতো সত্য ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। আমাদের নেত্রী, দেশনেত্রী তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। স্পষ্ট করে বলি তার যদি কিছু হয় তাহলে এটাকে দেশবাসী বিএনপি হত্যাকাণ্ড বলে গ্রহণ করবে এটা সরকারের মাথায় রাখতে হবে। শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন তার হত্যার বিচার হয়েছে। জিয়াউর রহমানের হত্যার বিচার হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে সেটার বিচারও করা হবে। বর্তমান সরকারপ্রধান এবং যারা দায়িত্বে আছেন তারা যদি এটা মনে রাখেন তাহলে তাদেরও ভালো হবে দেশেরও ভালো হবে আমাদেরও ভালো হবে।
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, এত একচোখা সরকার এদেশে আর কখনো আসেনি। আওয়ামী লীগ বাকশাল ছাড়া কিছুই বোঝে না। দেশের গোটা পুলিশের মধ্যে পাঁচ শতাংশ হয়তো খারাপ বাকি ৯৫ শতাংশ ভালো কিন্তু এই সরকার গোটা পুলিশকে এমন করেছে যে এ দেশের সাধারণ জনগণ পুলিশকে ভালো চোখে দেখে না। পুলিশ তো চাকরি করে। তারা না থাকলে এই সমাজ ভালো থাকবে না। কিন্তু যেভাবেই হোক এই সরকার পুলিশকে ধ্বংস করে ফেলেছে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ব্যবসায়ীরা সবাই খারাপ না। কিন্তু এই সরকারের সঙ্গে যারা আতাঁত করে চলে তারাই লুটপাট করে। বাকি সবাই ভালো কিন্তু তাদেরও লুটেরা দুর্নীতিবাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। কেউ কিছু বলতে পারে না। কেউ সত্য কথা বলতে পারে না। কিছু বললেই ঝামেলা। ভয়ের সাগরে ভাসছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে একজন নোবেল পেয়েছেন ড. ইউনূস। তার সঙ্গে কি শুরু করেছেন। সারা দেশের মানুষ, সারা বিশ্ব তার পক্ষে শুধুমাত্র সরকারের পক্ষের গুটিকয়েক মানুষ তার বিপক্ষে। আইনমন্ত্রী বলেছেন তার পক্ষে কথা বললে কোনো অসুবিধা নাই। সরকারি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান বলেছেন ইউনূস ভালো মানুষ তার বিপক্ষে আমি স্বাক্ষর করব না। এখন এমরানের নেমপ্লেট ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। এমরান তো আপনাদেরই লোক। একটু ভিন্নমত পোষণ করেছে। তাতেই আপনাদের এই দশা? এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে এদেশের কোনো কিছুই নিরাপদ নয়।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন একবার বললো সবার সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। তারপরে বললো কেউ আসলে আসুক না আসলে নাই। তারা আবার নির্বাচনের ঘোষণা দিলো। এ দেশের বুদ্ধিজীবী নামের ১৭১ জন চিহ্নিত হয়েছে। তারা কী জিনিস এদেশের জনগণ চিনেছে। ৫০ জন সম্পাদক এরাও চিহ্নিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আপনারাও চিহ্নিত হয়েছেন।
সরকারের উদ্দেশে দুদু বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো একটি নির্বাচন আপনারা করতে চান। ভেবে-চিন্তে করেন। পাকিস্তানিরা বাঙালিদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল। ৭০ সালের নির্বাচনে তারা ভেবেছিল শেখ মুজিবুর রহমানকে ক্ষমতা না দিলে কী হবে কিন্তু পাকিস্তান থাকে নাই। এই সরকারে যারা নিয়ন্ত্রণকারী তারা যদি মনে করে কিচ্ছু হবে না তাহলে তারা ভুল চিন্তায় আছে।
বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান টিপু প্রমুখ।