Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 2:15 am

ডিয়ার মি. প্রেসিডেন্ট, আমরা সত্য জানতে চাই

রাজর্ষী রায়: ইউএফও নিয়ে হোয়াইট হাউজের লুকোচুরি অনেক পুরোনো। ভিনগ্রহের প্রাণী নিয়ে তারা কী করেছেন, করছেন বা করতে চান তা খোলাসা করে না কখনো। হোয়াইট হাউজের এ আচরণে ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্রের প্যারাডাইস রিসার্চ গ্রুপ বা পিআরজি, গঠন হয় ১৯৯৬ সালে। শুরু থেকেই সরকার, এফবিআই, সিআইএ ও সামরিক বাহিনীর কাছে থাকা ইউএফও সংক্রান্ত সব ধরনের ফাইল অবমুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে আসছে পিআরজি। এ বিষয়ে নানা সময়ে হোয়াইট হাউজ বরাবর পিটিশনও করেছে সংগঠনটি। এ সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক স্টিফেন ব্যাসেট ২০১২ সালে বারাক ওবামার কাছে অনুরোধ করেছিলেন, ‘ডিয়ার মি. প্রেসিডেন্ট, আমরা সত্য জানতে চাই’।
এরপর অনেকেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন। এবার বুঝি ইউএফও বা আনআইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট রহস্য উম্মোচন হবে। ভিনগ্রহের যান বা সসার নামেও পরিচিত ইউএফও। ভিনগ্রহের প্রাণীদের দেখা পাবো আমরা। সেই আশার গুড়েবালি। সময় গড়িয়েছে অনেক কিন্তু কোনো তথ্য আজও দেয়নি হোয়াইট হাউজ কর্তৃপক্ষ। সেই সময় বারাক ওবামা সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিয়েছিলেন, এ গ্রহের বাইরে অন্য কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে যুক্তরাস্ট্র সরকারের কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে গত বছর বারাক ওবামার হয়ে যুক্তরাস্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে ইউএফও নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার অনুরোধ জানান। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে পৃথিবীতে আগ্রাসন চালাবে ভিনগ্রহের আগন্তুকরা এমনই মনে করেন বারাক ওবামা। এছাড়া মাঝে মাঝে ভিনগ্রহের আগুন্তকদের নিয়ে কিছু খবর চাউর করে পশ্চিমা গণমাধ্যম। এই যেমন, ২০১৭ সাল আসতে না আসতেই দক্ষিণ গোলার্ধে দেখা মিলল ইউএফও’র।
গত মাসের ২৩ জানুয়ারি দক্ষিণ গোলার্ধে দেখা যায় সসারটি। এ সসারের ভিডিওচিত্র ধারণ করা হয়েছে। ‘ভিনগ্রহের যান মজুদ আছে দক্ষিণ গোলার্ধে’ এ শিরোনামে ইউটিউবে দেখে নিতে পারেন ভিডিওটি। ভিডিওটির লিংক https://www.youtube.com/watch?v=wTM19wewp3w ।ইতিমধ্যে ইউটিউবের ‘টাইলার অব সিকিউর টিম১০’-এ আপলোড করা হয়েছে এটি। এছাড়া টাইলার অব সিকিউর টিম১০-এ এলিয়েনদের সাক্ষাৎ নিয়ে অসংখ্য ভিডিও ক্লিপিংস দেখতে পাবেন।
এর আগে অনেকেই নাকি দেখেছিলেন ইউএফও, এলিয়েনও। ২০১৪ সালে গুগল আর্থের সাহায্যে যুক্তরাস্ট্রের আকাশে ইউএফও দেখতে পাওয়ার দাবি করেছিলেন ইউএফও শিকারি স্কট ওয়ারিং। তিনি তখন এলিয়েনও দেখেছিলেন বলে দাবি করেন। শুধু তাই-ই নয়, তথ্যপ্রমাণ হিসেবে সেই ভিডিও আপলোড করেছিলেন ইউটিউবে।
ইউএফও দেখতে চাকতির মতো। অনেকটা পিরিচ আকৃতির। এটি মানুষের তৈরি নয়। ভিনগ্রহবাসীরা এ যানে চড়েই পৃথিবীতে আসেন। বিশ্বের অনেক দেশে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে বেশিবার এসেছে এলিয়েনরা। রাশিয়াসহ ইউরোপের অনেক দেশ চীন, জাপানও নানা সময়ে ইউএফও দেখা নিয়ে অফিসিয়াল রিপোর্ট করেছে। বজ পাতসহ ঝড়ের আগে ভাসমান আলো দেখে অনেকে ভীনগ্রহের যান বলে সন্দেহ করে থাকেন। এক চীনা গবেষক একে ‘বল লাইটনিং’ থিওরি বলে মত দিয়েছেন। গত বছর ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের কানপুরের কাছে মনপুর নাগারিয়া গ্রামের বাসিন্দারা ইউএফও দেখার দাবি করেন। এর আগে ২০১৩ সালে লাদাখে ও ২০০৭ সালে কলকাতায় দেখা যায় ইউএফও। তবে দাবি করা হচ্ছে আরো আগে ১৯৫৭ সালেও ভারতে এসেছিলেন ভিনগ্রহের প্রাণীরা। বিগত বছরে ইন্দোনেশিয়ার আকাশেও দেখা গিয়েছে ইউএফও। পেরু, নেপাল ও ভুটানও ঘুরেছেন তারা।
মহাজাগতিক প্রাণী নিয়ে মানুষের কৌতূহল চিরন্তন। তাদের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে বিশ্বের অনেক দেশ। তাদের অস্তিত্বের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছে নাসা, ইসা (ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সী) ও রাশিয়ার স্পেস রিসার্চ ইনস্টিটিউট। একদিন হয়তো ভিনগ্রহ বাসিন্দাদের রহস্য উম্মোচন হবে। তবে আমাদের জন্য তারা কল্যাণই ডেকে আনবে বলে ধারণা করা হয়।