দেশব্যাপী ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। গত জানুয়ারি থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি মোট ডেঙ্গুরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ৬৫৮ জন। হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্যই সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আবার ডেঙ্গুরোগে আক্রান্ত রোগীকে সময়মতো চিকিৎসা প্রদান না করলে মৃত্যু হতে পারে। তাই ডেঙ্গুজ্বর থেকে বাঁচতে সচেতনতা জরুরি।
ডেঙ্গু রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই; তবে ডাক্তারের নির্দেশনা মেনে সহজেই এ রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করা যায়।
ডেঙ্গুজ্বরের বাহক হলো এডিশ মশা। তাই এডিশ মশা প্রতিরোধ করতে পারলেই এই রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। গ্রাম কিংবা শহর যেখানে যে পরিবেশ হক না কেন বাড়ির আশপাশে ঝোপঝাড় অবশ্যই পরিষ্কার রাখতে হবে। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে যেহেতু এই রোগের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে; তাই শহরের প্রতিটি নর্দমা, ড্রেনগুলো পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে মশা বাচ্চা ফুটিয়ে বংশবিস্তার না করতে পারে। নর্দমা, ড্রেনগুলোতে পানির নিষ্কাশন ব্যবস্থা করতে হবে; কোনোভাবেই যাতে পানি জমতে না পারে। গ্রামে বাড়ির আশপাশে পানি জমতে দেয়া যাবে না। ছোট পুকুর, নালার পাড়গুলো যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বাসাবাড়ি কিংবা রাস্তাঘাট কোনো স্থানে ফলের ছোগলা, বোতল, অব্যবহƒত জিনিসপত্র ফেলে রাখা যাবে না। বাড়িতে ফুলের টব, ফুলদানি, হাঁড়ি-পাতিল, সরঞ্জামে যথাসময়ে পরিষ্কার রাখতে হবে; পানি জমতে দেয়া যাবে না। কারণ এডিশ মশা এগুলোতে লুকিয়ে থাকে এবং বংশবিস্তার করে। মশা নিধনের জন্য মাঝে মধ্যে বিষক্রিয়া স্প্রে করতে হবে। এতে লুকিয়ে থাকা মশাগুলো সহজেই বেরিয়ে আসবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় দিন বা রাত ঘুমানোর আগে অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে। সাধ্যমতো এডিশ মশা ধ্বংসের প্রতিষেধক ব্যবহার করা। পরিশেষে বলতে হয়, ডেঙ্গুজ্বর যেহেতু একটি ভাইরাসজনিত রোগ আর এর বাহক এডিশ মশা। মশা ক্ষুদ্র হলেও মানবজীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ। সর্বোপরি জনসচেতনতা সৃষ্টি ও পরামর্শ দিয়ে গ্রাম কিংবা শহরের সাধারণ মানুষকে এই রোগ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। যতটা সম্ভব মশা নিধনসহ সচেতন ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের যথাযথভাবে চিকিৎসার পরামর্শ নিলে সহজে ডেঙ্গুজ্বর ও এডিশ মশা প্রতিরোধ করে সুস্থ, সুন্দর ও রোগমুক্ত জীবনযাপন করা সম্ভব। তাই আতঙ্ক নয় বরং সচেতনতায় পারে ডেঙ্গু রোগ থেকে বাঁচাতে।
লুৎফর রহমান লাভলু
শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
ঢাকা কলেজ