ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগীদের পুষ্টিকর খাবার খুব জরুরি। এ সময় পানিশূন্যতা, দুর্বলতা ও ক্লান্তির পাশাপাশি রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য রোগীর প্রয়োজন সঠিক পুষ্টি পরামর্শ।
খাবারতালিকায় অবশ্যই প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখতে হবে। প্রোটিন দ্রুত আরোগ্য লাভে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ সময়ে তাই মাংস, মাছ, ডাল, ডিম, বাদাম ও দুধ খাবারতালিকায় রাখতে হবে। দই বা দইয়ের লাচ্ছিও খুব উপকারী খাবার। এটা প্রোবায়োটিকের ভালো উৎস। দইয়ে অনেক উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা আমাদের অন্ত্রের জন্য দরকারি। এসব ব্যাকটেরিয়া সহজে আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। চিকেন স্যুপ, বাদাম ও দুধের শেক এবং ডিমের পুডিং উপকারী। জ্বরে আক্রান্ত রোগী যেহেতু ভারী খাবার খেতে পারে না, তাই এমন পুষ্টিকর হালকা খাবার একটু পরপর খেলে শরীরে শক্তি পাওয়া যায়। পাশাপাশি শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি সরবরাহ হয়। প্রোটিনের পাশাপাশি আয়রনযুক্ত খাবারও খেতে হবে। খেজুর, কলা, বেদানা, তরমুজ, ছোলা, শিমের বীজ, মিষ্টিকুমড়ার বীজ, কলিজা ও লাল মাংস নিয়মিত খেতে হবে। ভিটামিন
সি-যুক্ত খাবার, যেমন লেবু, কমলা, মালটা, আমলকী, জলপাই, জাম্বুরা, আনারস, কিউই, বেরিস ও কাঁচা মরিচ খেতে হবে। ভিটামিন সি আমাদের শরীরে সহজে আয়রন শোষণে সাহায্য করে, পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগীদের খাবারে ভিটামিন কে-যুক্ত খাবার রাখা খুব জরুরি। ভিটামিন কে রক্তপাতের ঝুঁকি কমায়। পালংশাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি, বিট, টমেটো, ধনেপাতা ও লেটুসপাতা খাবার তালিকায় রাখতে হবে। অনেকে বলে থাকেন প্লাটিলেট বাড়াতে পেঁপেপাতা বা মিষ্টিকুমড়ার জুস ভালো। এটি এখনও প্রমাণিত নয়, তবে খেলে ক্ষতি নেই। সঙ্গে লেবুর রস মিক্সড করলে খারাপ লাগবে না। প্রচুর পানি ও তরলজাতীয় খাবার খাবেন। পানি, ডাবের পানি ও ফলের শরবত খান।
কী খাবেন না: ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত খাবার, উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার, ফাস্ট ফুড ও সফট ড্রিংকস খাওয়া যাবে না। দুধ-চা ও কফি খাবেন না। তবে হারবাল চা, সবুজ চা খাওয়া যাবে। প্রোটিন দ্রুত আরোগ্য লাভে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ডেঙ্গু-আক্রান্ত রোগীদের খাবারের তালিকায় তাই মাংস, মাছ, ডাল, ডিম, বাদাম ও দুধ রাখতে হবে।
উম্মে সালমা
পুষ্টি বিশেষজ্ঞ
ডিকেএমসি হাসপাতাল