নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে আরও ২০৭ রোগী ভর্তি হয়েছেন। মারা গেছেন দুজন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এ তথ্য জানিয়েছে।
নতুন আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে রাজধানী ঢাকার হাসপাতালে ১৬২ জন এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ৪৫ জন ভর্তি হন। এ নিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৯৩৫ জনে এবং মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৮ জনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৯৩৫ জনের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ৭৫৮ এবং ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৭৭ জন।
গতকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ভর্তি হওয়া ২০৭ জনের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে ৬৭ জন এবং বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ৯৫ জন ভর্তি হন। এছাড়া ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৫ জন ভর্তি হন।
১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০ হাজার ৩৩৬ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৯ হাজার ৩২৩ জন।
হাসপাতালে ভর্তি মোট ২০ হাজার ৩৩৬ জনের মধ্যে জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে তিনজন, মে মাসে ৪৩ জন, জুনে ২৭২ জন, জুলাইয়ে দুই হাজার ২৮৬ জন, আগস্ট মাসে সাত হাজার ৬৯৮ জন, সেপ্টেম্বরে সাত হাজার ৮৪১ জন ও ১১ অক্টোবর পর্যন্ত দুই হাজার ১৩৯ জন ভর্তি হন।
এছাড়া চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ৭৮ জনের মধ্যে জুলাই মাসে ১২ জন, আগস্টে ৩৪ জন, সেপ্টেম্বরে ২৩ জন ও ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়।
আয়কর মেলা আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে করদাতাদের সুবিধার্থে সব কর অঞ্চলে নভেম্বরজুড়ে আয়কর মেলার সুবিধা দেয়া হবে। চলমান কভিড পরিস্থিতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গতকাল এনবিআরের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, করদাতাদের সেবা নিশ্চিত করতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিমের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালেও কভিড সংক্রমণের কারণে মেলা আয়োজন থেকে বিরত ছিল প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে এনবিআরের কর বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, চলতি মাসের ৭ অক্টোবর সার্বিক বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এরপর রোববার (১০ অক্টোবর) এনবিআর চেয়ারম্যানের সম্মতিক্রমে ১৭টির মতো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটি ও মনিটরিং কমিটিসহ বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এনবিআরের নেয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো কভিড পরিস্থিতিতে আয়কর মেলা আয়োজনের পরিবর্তে কর কমিশনার অঞ্চলগুলোতে গত বছরের মতো জাঁকজমকপূর্ণভাবে ও উৎসবমুখর পরিবেশে ১ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন গ্রহণের জন্য করদাতাদের সেবা প্রদান করবে। প্রতিটি অফিসে উম্মুক্ত স্থান, কার পার্কিং এরিয়া প্রভৃতিতে রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপন করে রিটার্ন গ্রহণের পরিবেশকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। একই সঙ্গে রিটার্ন দাখিলকারী করদাতাদের তাৎক্ষণিক প্রাপ্তি স্বীকারপত্রের সঙ্গে রিটার্ন দাখিলের জন্য উৎসাহদানে উপহারসামগ্রী দিতে হবে। সব কর কমিশনার সেবা কেন্দ্রে ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন ও রি-রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে, প্রতিটি কর অঞ্চলের নিজস্ব ওয়েবসাইট তথ্যসহ হালনাগাদ করতে হবে। উক্ত ওয়েবসাইটে আয়কর-সংক্রান্ত বিভিন্ন ফর্ম, পরিপত্র, রিটার্ন পূরণের নির্দেশিকা, ভিডিও টিউটোরিয়ালসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সন্নিবেশ করতে হবে, কর অঞ্চলগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখবে। অন্যান্য মাধ্যমের পাশাপাশি ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে, কর অঞ্চল-৪ এর ব্যবস্থাপনায় সচিবালয়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সচিবালয় ও অফিসার্স ক্লাবের সদস্যদের জন্য অফিসার্স ক্লাবে রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপনের মাধ্যমে নভেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহ কর তথ্য সেবা দেয়া হবে। সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে ২ নভেম্বর করদাতাদের রিটার্ন গ্রহণ ও কর তথ্য সেবা দিতে হবে। নভেম্বর মাসব্যাপী করদাতাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল সহজীকরণ ও কর তথ্য সেবাদানের বিষয়টি নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে নভেম্বরের আগে প্রেস ব্রিফিং করা হবে, সব কর অঞ্চলের কমিশনাররা তাদের নিজ নিজ কর অঞ্চলের পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনাবলী অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেবেন। নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল অথবা প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় ট্যাক্স কার্ড ও ঢাকার কর অঞ্চলগুলোর সেরা করদাতাদের সম্মাননা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামের চারটি কর অঞ্চলে কেন্দ্রীয়ভাবে ও অন্য সব কর অঞ্চল নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় যথাযথ আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে জেলা ও সিটি করপোরেশনভিত্তিক সেরা করদাতা সম্মাননা দেবে। ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস ২০১১ উদ্যাপন করা হবে। এ সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, এনবিআরের আওতাধীন সারাদেশে ৩১টি কর অঞ্চল রয়েছে। ২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর করমেলা আয়োজন করে আসছে এনবিআর। এরই মধ্যে এই করমেলা সাধারণ করদাতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তবে গত বছরও কভিড বিবেচনায় নিয়ে মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি।