ডেঙ্গুতে এবার শিক্ষা হয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডেঙ্গুজ্বর মোকাবিলায় সফলতার দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এ বছরের পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়েছেন তারা। গতকাল রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য শিক্ষা। আগামী বছর যাতে রোগটা কম হয়, আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারি এবং সারা বছর এটা নিয়ে কাজ করি, সেই নির্দেশনা দিয়েছি।’
এবার বর্ষার শুরুতে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর ক্রমশ তা ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। এ বছর এ পর্যন্ত ৮৩ হাজার ৪৮১ জন মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ঢাকা সিটি করপোরেশনের মশা নিধন কার্যক্রমে শিথিলতার অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন মশা মারতে যে ওষুধ দিচ্ছে তা কার্যকর নয় বলে আইসিডিডিআরবির গবেষণায় উঠে আসে।
এ নিয়ে সমালোচনা আর উদ্বেগের মধ্যে বিষয়টি উচ্চ আদালতে গড়ায়। পরে কোরবানির ঈদের আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন চীন থেকে এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভারত থেকে নতুন ওষুধ নিয়ে আসে।
আগস্টের মাঝামাঝি সময় কোরবানির ঈদের পর থেকে হাসপাতালে নতুন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি এসে ঢাকায় নতুন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আগের দুই মাসের তুলনায় অনেকটা কমে এলেও রাজধানীর বাইরে পরিস্থিতির ততটা উন্নতি হয়নি।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ২০৩টি মৃত্যুর তথ্য পেলেও ১১৬টি ঘটনা পর্যালোচনা করে ৬৮ জনের মৃত্যু ডেঙ্গুতে হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।
হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের পাশাপাশি ফার্মাসিস্ট নিয়োগের নীতি প্রণয়ন নিয়ে বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) ও বাংলাদেশ ফার্মাসি কাউন্সিল আয়োজিত সংলাপে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সফলতার দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই সফলভাবে ডেঙ্গু মোকাবিলা করেছি। আমাদের ডেঙ্গু রোগী কমে আসছে।’
সম্প্রতি আটটি ক্যানসার হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকার স্বাস্থ্যসেবা খাতেই এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। তবে নতুন নিয়োগ পাওয়া ১০ হাজার চিকিৎসকের একজনও হাসপাতালে যোগ না দেওয়ায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছেন। আড়াই বছর হয়ে গেছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটি ডাক্তারও আমাদের কাছে আসে নাই। আমাদের মন্ত্রণালয়, প্ল্যানিং মন্ত্রণালয়, পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ হয়েছে। আড়াই বছরে একটি ডাক্তারও আমরা পাইনি।’
চিকিৎসকের পাশাপাশি ক্রমান্বয়ে ফার্মাসিস্ট নিয়োগের ব্যবস্থাও হবে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘ভালো ওষুধ দেওয়া হবে, চিকিৎসা ভালো হবে এবং আমাদেরও পরিকল্পনা আছে, সরকারি হাসপাতালে ফার্মাসি এক্সপান্ড করব।’
স্বাস্থ্য সচিব ও ফার্মাসি কাউন্সিলের সভাপতি আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
অন্যদের মধ্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইসমাইল খান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়েল উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শহীদুল্লাহ শিকদার, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ আজাদ আবুল কালাম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০