ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৬০০ ছুঁইছুঁই

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডেঙ্গুতে এক মাসে এই প্রথম তিনশর বেশি মৃত্যু দেখল বাংলাদেশ। আগস্টে রেকর্ড ৩৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এডিস মশাবাহিত এ রোগে। হাসপাতালেও ৭৩ হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন এ মাসে, যা সর্বোচ্চ। গতকাল শুক্রবার সেপ্টেম্বরের প্রথম দিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৪ জনের মৃত্যু এবং এক হাজার ৫৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

সূত্রমতে, মে থেকে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকে। আগস্টে তা তীব্র আকার ধারণ করে। এ মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে ৭৩ হাজার ৫১০ জনকে। এর মধ্যে ৩৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে এর আগে ২০১৯ সালের আগস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬ জন ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

এত দিন সেটাই ছিল এক মাসে ভর্তি রোগীর সর্বোচ্চ সংখ্যা। আর এর আগে সারা বছরেও তিনশ’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়নি। নতুন রোগীদের নিয়ে এই বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৪২ জনে। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৯৭ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৮ হাজার ৩৪৮ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ৩ হাজার ৮১৮ জন  এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪ হাজার ৫৩০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।

চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে রোগীদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ঢাকায় ৫৮ হাজার ৬১০ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬৬ হাজার ৭৩২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৫৯৩ জন। ঢাকায় ৫৪ হাজার ৩৫৩ এবং ঢাকার বাইরে ৬২ হাজার ৪৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুনে যেখানে ৫ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, জুলাইয়ে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮৫৪ জনে। আগস্টে তা আরও বেড়েছে। মাসের হিসাবে জানুয়ারিতে ৫৬৬, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬, মার্চে ১১১, এপ্রিলে ১৪৩, মেতে ১ হাজার ৩৬ ও জুনে ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। জুনে সারাদেশে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

জুলাইয়ে সংখ্যাটি এক লাফে ২০৪ জনে উঠে যায়। এর আগে জানুয়ারিতে ৬, ফেব্রুয়ারিতে ৩, এপ্রিলে ২, মেতে ২ এবং জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে।

এ বছর এডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গিয়েছিল, তা থেকেই ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন।

এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০২২ সালে ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সরকারি হিসাবে ওই বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০