ডেঙ্গুর মৌসুম বলে এখন এই রোগের প্রবণতা বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। ডেঙ্গুর উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নিতে হবে। তবে ডেঙ্গু হলে কিছু খাবার সহায়ক হতে পারে। যেমন
লেবু: লেবুর রসে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকে। ভিটামিন ‘সি’ রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ভিটামিন ‘সি’ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে তোলে। ফলে প্লাটিলেট ধ্বংস হওয়া থেকেও রক্ষা পায়।
পেঁপে: পেঁপেতে পাপাইন ও কিমোপেইনের মতো এনজাইম রয়েছে, যা হজমে সহায়তা করে। ডেঙ্গু হলে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে যায়। তখন পেঁপের সবজি অথবা পেঁপে পাতার জুস খেলে প্লাটিলেটের পরিমাণ বেড়ে যায়। প্রতিদিন বাসায় তৈরি করা ৩০ মিলিলিটার পরিমাণ পেঁপে পাতার জুস খাওয়া যেতে পারে। অথবা পেঁপের তরকারি খেলেও উপকার মিলবে।
ডালিম: এতে রয়েছে প্রচুর আয়রন, ভিটামিন ও মিনারেল। রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে ডালিম বেশ কার্যকর। নিয়মিত ডালিমের রস খেলে প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়ে। ডালিমের রসের ভিটামিন দুর্বলতা দূর করে কাজে শক্তি দেয়।
ডাবের পানি: ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর ইলেকট্রোলাইটস। যে কোনো জ্বর হলে শরীরে তরলের ঘাটতি হয় বা পানিশূন্যতা দেখা দেয়। আর ডাবের পানি সেই ঘাটতি মেটাতে বেশ ভূমিকা রাখে।
মিষ্টি কুমড়া: মিষ্টি কুমড়া রক্তের প্লাটিলেট তৈরি করতে বেশ কার্যকর। এ ছাড়া মিষ্টি কুমড়ায় আছে ভিটামিন ‘এ’, যা প্লাটিলেট তৈরি করতে সহায়তা করে। রক্তের প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া এবং এর বীজ খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
হলুদ: জ্বর বা প্রদাহ কমাতে হলুদের রয়েছে কার্যকর শক্তি। এক গ্লাস দুধের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে পান করা যেতে পারে।
কমলালেবু: প্রতি ১০০ গ্রাম কমলালেবুতে ৫০ মিলিগ্রামই ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়; যা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। কমলা ও কমলার রস ডেঙ্গুতে ভালো কাজে আসতে পারে। কারণ এটিতে রয়েছে ভিটামিন ‘সি’ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। আর এই দুটি উপাদান ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করে।
স্যুপ: ডেঙ্গু হলে রোগীকে সবজির স্যুপ, টমেটোর স্যুপ, চিকেন স্যুপ বা কর্ন স্যুপ দেয়া যেতে পারে। মুরগির স্যুপে কারনোসিন নামের উপাদান রয়েছে, যা ভাইরাসজনিত জ্বরের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
খেয়াল রাখবেন: ডেঙ্গু হলে মসলাযুক্ত, তৈলাক্ত ও ভাজা খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এই খাবারগুলো খেলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে, হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডেঙ্গুতে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। এই খাবারগুলো হার্ট রেট বাড়িয়ে দিতে পারে। সেই সঙ্গে দেহে ক্লান্তি নিয়ে আসতে পারে। জ্বরের সময় অতিরিক্ত তেল, মসলা, ঝাল দিয়ে রান্না করা গুরুপাক খাবার খাওয়া উচিত নয়। এই সময় খেতে হবে কম ঝাল মসলা দিয়ে তৈরি মাছ বা মাংসের পাতলা ঝোল।
রাজিয়া হক
পুষ্টিবিদ, ডায়েট প্লানেট বাংলাদেশb