নিজস্ব প্রতিবেদক : এইডস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে আরও ২ হাজার ৭৫১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৬৩২ জনই ঢাকার বাইরে।
গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি রোগীদের নিয়ে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৪৮৩ জনে। আগস্টের প্রথম ৭ দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ৬৫১ জন।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত একদিনে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছেÑএ নিয়ে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩২৭ জনের মৃত্যু হলো। আগস্টের প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত মোট ৭৬ জনের মৃত্যু হলো, অর্থাৎ প্রতিদিন ১০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর আসছে।
বাংলাদেশে এর আগে কেবল ২০১৯ সালের এর চেয়ে বেশি এক লাখের মতো রোগী ভর্তি হয়েছিল। আর মৃত্যুর সংখ্যা ৩০০ ছাড়াল এবারই প্রথম। ভর্তি রোগী ও মৃত্যুর এই সংখ্যা সামনে আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত কেবল ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ১১৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
সব মিলিয়ে তখন পর্যন্ত সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯ হাজার ৫৭২ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৪ হাজার ৬৫২ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৪ হাজার ৯২০ জন।
এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুন মাসে যেখানে পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সেখানে জুলাই মাসে ভর্তি হন ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন রোগী। জুন মাসে ৩৪ জনের মৃত্যু হলেও জুলাই মাসে প্রাণ যায় ২০৪ জনের।
এর আগে জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন এবং মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হন।
তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন ও মে মাসে দুজনের মৃত্যু হয়।
এ বছর এইড মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি দেখে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠার সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। পরিস্থিতি সেই দিকে গড়াচ্ছে, মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে আগের যে কোনো বছরকে ছাড়িয়ে গেছে।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন।
এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। সরকারি হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের।