ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ৭০ হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডেঙ্গুজ্বরে প্রতিদিনই দু-একজনের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে আসার মধ্যে সারা দেশে মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা কমার তথ্য দিয়েছে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতর। যদিও চলতি বছর এ পর্যন্ত মোট ৭০ হাজারের বেশি ডেঙ্গু রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে আগস্টেই ভর্তি হয়েছেন ৬৫ হাজারের বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যানুযায়ী, গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৬০ জন ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যা গত এক মাসে সবচেয়ে কম। নতুন ভর্তি এই রোগীদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৪৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪১১ জন।
সরকারি হিসাবে, চলতি বছর এপ্রিলে ৫৮ জন, মে মাসে ১৯৩, জুনে এক হাজার ৮৮৪ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। জুলাই মাসে তা এক লাফে ১৬ হাজার ২৫৩ জনে পৌঁছায়। আগস্টে রোগীর সংখ্যা জুলাইয়ের তিনগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ে ৫১ হাজার ৭৩৪ জন হয়েছে।
ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমতে থাকার এই প্রবণতার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, ‘হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা তো বেশ কমে আসছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্তের ট্রেন্ড এখন কমার দিকে।’
তবে গত শনিবারও নতুন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম ছিল। ওইদিন এক হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার আগের দিন ভর্তি হন এক হাজার ৪৪৬ জন। গত শনিবারের পর রোগী ভর্তির সংখ্যা কিছুটা বেড়ে রোববার ভর্তি হয়েছিলেন এক হাজার ২৯৯ জন, সোমবার এক হাজার ২৫১ এবং মঙ্গলবার এক হাজার ২৯৯ জন। আর চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা ৭০ হাজার ১৯৫।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ বলেন, ‘সেটাও ঠিক। তুলনামূলক তো কমছে। অবশ্যই কমছে। অস্বীকার করার উপায় নেই। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলতে পারি। এখন এমন তো নয় যে, হাসপাতালে সিট খালি নেই।’
এদিকে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভোর ৫টার দিকে পার্কভিউ হাসপাতালে বাদশা মোল্লা (৫৬) নামে ওই রোগী মারা যান বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।
বাদশা মোল্লা চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি গত ২০ আগস্ট অসুস্থতা নিয়ে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে ২২ আগস্ট তাকে পাঁচলাইশের পার্কভিউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. মো. নুরুল হায়দার জানান, ওই রোগীর ডেঙ্গু এনএসওয়ান পজিটিভ ছিল। তার ডায়াবেটিস, প্রেসারসহ অনান্য সমস্যাও ছিল।
পরবর্তী সময়ে অসুস্থ অবস্থায় বাদশা মোল্লার ‘মাল্টি অর্গান ফেইলিওর’ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব কারণে বাদশা মোল্লা মারা গেছেন বলে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে।