নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকায় ব্যাপকভাবে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ায় মশাবাহিত এ রোগ থেকে মুক্তির জন্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লন্ডন সফররত প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার টেলিকনফারেন্সে ঢাকার বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে কৃষক লীগের রক্তদান কর্মসূচিতে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্যে সমসাময়িক বিভিন্ন প্রসঙ্গের সঙ্গে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় সম্পর্কে বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডেঙ্গুর প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমি কতগুলো নির্দেশনা দিয়েছি। আমি মনে করি, আমাদের পার্টির মানুষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে মশার বংশবিস্তার যাতে না হতে পারে তার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে এবং নিজেদের, পরিবারকে সুরক্ষিত রাখা, ঘরবাড়ি সুরক্ষিত করা হয় সে জন্য সবাইকে আমি আহ্বান জানাচ্ছি।’
শোকের মাস উপলক্ষে কৃষক লীগের রক্তদান ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করে স্বেচ্ছায় রক্ত দেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শোকের মাস বারবার আমাদের মধ্যে ফিরে আসে আর বারবার আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমরা কী হারিয়েছি! আজকে শোকের মাসের প্রথম দিন। আমাদের আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছে। সেই অনুযায়ী কৃষক লীগ রক্তদান ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি করছে। মুমূর্ষু রোগীর জীবন রক্ষায় ত্যাগ স্বীকার যে কোনো মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, মানবতার। ১৫ আগস্ট সামনে রেখে রক্তদান কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। রক্ত দিলে রক্ত কমে না, বরং বাড়ে। আমাদের দলের সব নেতাকর্মী, মুজিব আদর্শকে যারা বিশ্বাস করে, আমি তাদের আহ্বান করবÑরক্ত দান করতে। আর্ত-মানবতার সেবায় আত্মত্যাগ করা প্রতিটি মানুষের কর্তব্য। এ থেকে যে তৃপ্তি পাওয়া যায়, যে আনন্দ পাওয়া যায়, ভোগে পাওয়া যায় না ত্যাগেই পাওয়া যায়।’
রক্তদানের পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধনের ঘোষণা দিয়ে দলের সব নেতাকর্মীকে তিনটি করে গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা। ‘জনপ্রতি অন্ততপক্ষে তিনটা করে বৃক্ষরোপণ করবেন। একটি বনজ, একটি ভেষজ ও একটি ফলদ।’ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শোকের মাসের কর্মসূচি উদ্বোধন ঘোষণায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জাতির জনক রক্ত দিয়ে গেছেন। তিনি বলেছিলেন, প্রয়োজনে তিনি রক্ত দেবেন, ঠিকই তিনি রক্ত দিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে তার রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। দেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে, যখন কোনো একটি ভালো কাজ হয়, দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয় তখন আমি চিন্তা করি, আমার আব্বার আত্মাটা শান্তি পায়। নিশ্চয়ই তিনি বেহেস্ত থেকে দেখেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির জনকের আদর্শ, তার লক্ষ্য ও চিন্তা-চেতনাকে বাস্তবায়ন করে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য ক্ষমতায় এসেছি। কতটুকু পেরেছি বাংলার মানুষ তা বিচার করবেন।’ আগামী ৩ আগস্ট লন্ডনে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে শোকের মাসের কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান তিনি।