নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীসহ সারাদেশে চলতি বছর এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২৬ হাজার রোগী ভর্তি হন। তাদের মধ্যে ২৫ হাজার ৩৫৩ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ১০৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে রাজধানী ঢাকার হাসপাতালে ৮৪ ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ১৯ রোগী ভর্তি হন। এছাড়া ডেঙ্গুতে চট্টগ্রামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৮ জন।
গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ কামরুল কিবরিয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে রাজধানীসহ সারাদেশে হাসপাতালে ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৫৪৯ জন। তাদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৪৩৫ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে ১১৪ জন রোগী ভর্তি আছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে হাসপাতালে মোট ভর্তি হওয়া ১০৩ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে রাজধানীর সরকারি হাসপাতালে ৩৬ ও বেসরকারি হাসপাতালে ৪৮ রোগী ভর্তি হন। এছাড়া ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হন ১৯ জন।
এছাড়া চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯৮ জনের মৃত্যু হয়। তার মধ্যে জুলাইয়ে ১২, আগস্টে ৩৪, সেপ্টেম্বরে ২৩, অক্টোবরে ২২ ও ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যু হয়।
নতুন করে মৃত সাদ্দাম হোসেন আল কাদেরির (৩৫) বাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জাফরাবাদ গ্রামে। তিনি একই উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের কদমরসুল গ্রামের গাউসিয়া তৈয়বিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ও ভাটিয়ারী স্টেশন রোড এলাকার নেয়ামত আলী শাহ জামে মসজিদের খতিব ছিলেন।
চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. নুরুল হক জানিয়েছেন, জ্বরে আক্রান্ত সাদ্দামকে শারীরিক আরও বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে গত ১৫ নভেম্বর দুপুর ২টা ৫৩ মিনিটে মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকের পরামর্শে ওইদিনই তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) রাখা হয়। এরপর পরীক্ষায় তার ডেঙ্গু পজিটিভ ফল আসে। গতকাল সকালে সাদ্দামের মৃত্যু হয়েছে। ডা. নুরুল হক আরও বলেন, ‘সাদ্দাম হোসেনের জ্বরের পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ ছিল। প্রচণ্ড শরীর ব্যথা ছিল। তার পেটও ফুলে গিয়েছিল। এসব লক্ষণ সাধারণত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর থাকে। আমরা পরীক্ষা করালে ফল পজিটিভ আছে। মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তির আগে একই উপসর্গ নিয়ে তিনি আরও দুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তিনি আক্রান্ত ছিলেন।’