ডেঙ্গু নিয়ে সরকার ব্লেম গেমের আশ্রয় নিয়েছে: রশীদ-ই-মাহবুব

নিজস্ব প্রতিবেদক: অবহেলার কারণে ডেঙ্গু সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিকার আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব। তিনি বলেন, ‘এর ব্যর্থতা সবাইকে নিতে হবে। প্রথম কথা হচ্ছে, সরকার দোষারোপের খেলার (ব্লেম গেমের) আশ্রয় নিয়েছে। সমস্যা এখন দুটি ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা ও মশা নিয়ন্ত্রণ।’ গতকাল রাজধানীর তোপখানা সড়কের বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদের কনফারেন্স কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘ডেঙ্গুজ্বরের বর্তমান অবস্থা: আতঙ্ক, সংকট, বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি রশীদ-ই-মাহবুব বলেন, ‘ডেঙ্গুকে মহামারি বললেই কি নতুন কিছু যোগ হবে? মোটেই না। আমরা চাই এটা নির্মূল হোক। আমরা আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য মহামারি ব্যবহার করব না। চিকিৎসকেরা চিকিৎসা করছেন, কিন্তু সেখানেও কিছু গাফিলতি আছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর যে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে, তা ঢাকাকেন্দ্রিক। কিন্তু ডেঙ্গু রোগটি সারা দেশে ছড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রথম কাজ হবে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকদের ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতন করা।’
রশীদ-ই-মাহবুব বলেন, ‘ঈদের সময় অসংখ্য মানুষ বাড়িতে যাবে। তাদের সঙ্গেও কিন্তু ডেঙ্গু রোগের বাহক সারা দেশে ছড়াবে। বাস, ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রার আগে কেন মশা নিধন করা হবে না! এটা একটা সাধারণ ব্যাপার। মশা নিধনে জনগণকে নিয়ে এখনও আমরা এগোতে পারিনি। এলাকাবাসীকে নিয়ে প্রতিটি পাড়া-মহল্লা-গ্রামে মশক নিধন অভিযান শুরু করতে হবে। তিনি আরও বলেন, মশা মারার ওষুধ নিয়ে দোষারোপ চলছে। এর মধ্যে বহু ঘটনা আছে, ব্যবসা জড়িত। মশা মারার যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, তা পরীক্ষায় অনুপযোগী, মশা মারার উপযোগী ওষুধ আনতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি অধ্যাপক এম আবু সাঈদ বলেন, ‘ডেঙ্গুর পরিস্থিতি আজ সাংঘাতিক প্রাদুর্ভাব বা মহামারির মতো দেখা দিয়েছে। সরকার চাইলে ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষা বিনা মূল্যে করতে পারে। আমরা মনে করি, বছরের কোনো একটি নির্দিষ্ট দিনকে ডেঙ্গু দিবস ঘোষণা করে, তার আগে-পরে দুই থেকে তিন দিন ডেঙ্গু সপ্তাহ ঘোষণা করে সারা দেশের মানুষকে নিয়ে মশক নিধন কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে। এতে সচেতনতা বাড়বে। সবাই এগিয়ে এলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব।’
লিখিত বক্তব্যে ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক কাজী রকিবুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদে লাখ লাখ মানুষ ডেঙ্গুর জীবাণু নিয়ে বাড়িতে যাবে। তাদের মধ্যে অনেকেই আক্রান্ত হবে এবং স্থানীয় লোকজনের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে বলে আমাদের আশঙ্কা। তাই জেলা ও উপজেলায় ডেঙ্গু রোগ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগকে অতি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে ডেঙ্গু রোগ শনাক্তের বিভিন্ন পরীক্ষার কিটস সংকট বাজারে দেখা দিয়েছে। দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনমতো এই কিটস কীভাবে হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করা যায়, সে বিষয়ে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। ভর্তুকি ও শুল্ক কমিয়ে দিয়ে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও যেন আরও স্বল্প মূল্যে কিটস দিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা যায়, সে ব্যবস্থাও নিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০