ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত জ্বর। এ ভাইরাস মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে জন থেকে জনে। এই মরণব্যাধি ডেঙ্গু আতঙ্ক ও মৃত্যুভয় নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এই জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি জনগণের মনে অজানা শঙ্কার সৃষ্টি করেছে। রাজধানী ও এর আশেপাশের জেলাগুলোয় অনেকে আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গুতে।
এটাও ঠিক, আতংকিত হয়ে ডেঙ্গুকে ভয়ের কারণ হিসেবে না নিয়ে সচেতন হতে হবে। দ্রুততার সঙ্গে সঠিক চিকিৎসা নিলে এ ভয়ানক জ্বর থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি।
ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত জ্বর হওয়ায় অন্য রোগের মতো সরাসরি এর কোনো প্রতিষেধক নেই। নেই কোনো টিকা। এ কারণে এর প্রকোপ বাড়ছে। ইদানীং ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গুর সঙ্গে চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের প্রকোপও দেখা দিয়েছে। এতে আক্রান্ত রোগীদের হঠাৎ করে অনেক জ্বর ও গায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হয়।
সাধারণত মশক নিধন কার্যক্রমের স্থবিরতা, গাইডলাইনের অভাব ও অসচেতনতা ডেঙ্গুর প্রকোপের জন্য দায়ী বলে বিজ্ঞমহলের ধারণা। মাঝেমধ্যে বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা খুব বেশিমাত্রায় প্রজনন সক্ষমতা বাড়িয়ে এডিস মশার বিস্তার ঘটিয়ে মশার পরিমাণ বৃদ্ধি করছে। জানা গেছে, এডিস মশার সংখ্যা বাড়লে বৃদ্ধি পাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত লোকের হার। ডেঙ্গুর হাত থেকে বাঁচতে হলে মশার উৎস খুঁজে বন্ধ করতে হবে। তাহলেই ডেঙ্গুর ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে।
ক্লাসিক্যাল ও হেমোরেজিক ডেঙ্গু নামে দুই ধরনের ডেঙ্গু জ্বর রয়েছে। এ জ্বরের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে এডিস মশার বিস্তার রোধ করতে হবে। এই মশা যেন কামড়াতে না পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। রাজধানীসহ দেশের সবখানে মশা নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। স্বচ্ছ পরিষ্কার পানিতে এরা ডিম পাড়ে, তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী এসব স্থানে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং পরিষ্কার রাখতে হবে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করতে হবে। এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে। আক্রান্ত হলে করণীয় সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে রাজধানী এবং জেলা-উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু শনাক্তকরণ ও চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। সর্বোপরি এডিস মশা নিধনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তবেই সম্ভব ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাওয়া।
নগরবাসীর দাবি ও প্রত্যাশা, যত দ্রুত সম্ভব এডিস মশার বিস্তার রোধ ও মশা ধ্বংস করে আক্রান্তদের সঠিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে ডেঙ্গু আতঙ্ক থেকে রক্ষা করা।
সফিউল্লাহ আনসারী