ডেঙ্গু মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ চাই এখনই

ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে গেছে বলেই খবর। এবার আগের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। এ রোগ ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসকদের অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে এর মধ্যে। তারপরও এবার ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এটি উদ্বেগের বিষয়। রোগ বিস্তারের প্রকোপ দেখে অনেকে মহামারীর আশঙ্কাও করছেন। এজন্য ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশা দমনে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে আমরা’ মঞ্চ থেকে সিটি করপোরেশন ও সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি এ দাবি জানানো হয়। এ বিষয়ে শেয়ার বিজ গতকাল একটি সংবাদ গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করে।
গত ১৫ বছরের মধ্যে এবারই ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জনই শিশু। চলতি বছর ছয় হাজার ৮৭৭ জন আক্রান্ত হয়েছে। যেসব রোগী দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত, তাদের অবস্থা বেশি খারাপ। এতে মৃত্যুর জন্য দেরিতে চিকিৎসা শুরু ছাড়াও আক্রান্ত হওয়ার পর ব্যথার ওষুধ সেবন, পর্যাপ্ত পানি পান না করাও কারণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা থেকে জানা যায়, এ বছর আগের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাই সচেতনতার পাশাপাশি ডেঙ্গুর ভাইরাসবাহী এডিস মশা নিধনে তৎপর না হলে এ মৃত্যু মহামারী আকার ধারণ করতে পারে।
সচেতনতা বাড়াতে এবং ডেঙ্গু নির্মূলে জরুরি ভিত্তিতে সমন্বিত কর্মসূচি নেওয়া উচিত। এজন্য ঢাকা সিটি করপোরেশন ও সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগকেই দায়িত্ব নিতে হবে। সিটি করপোরেশনের মশক নিধনের ওষুধের মান সঠিক আছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
সিটি করপোরেশন থেকে এ বছর রোগের প্রকোপ দেখা দেওয়ার সময় একটি জরিপও চালানো হয়েছিল। তাতে রাজধানীর অভিজাত কয়েকটি এলাকায় ডেঙ্গুর জীবাণুবাহক এডিস মশা বেশি পাওয়া যায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ওইসব এলাকায় বিশেষ অভিযান চালানোর ঘোষণাও দেওয়া হয়। কিন্তু সে মোতাবেক এডিস মশা নিধন কতটুকু করা হয়েছে, তা বিবেচনার বিষয়। বাস্তবতা হচ্ছে, রাজধানীর অভিজাত, কম অভিজাত, কী অনভিজাত এলাকাÑপ্রায় সর্বত্র এখন ডেঙ্গুর রাজত্ব। ধানমন্ডি, সোবহানবাগ, শুক্রাবাদ, গুলশান, বনানী, বারিধারা, হাতিরপুল, আজিমপুর কলোনি, পুরান ঢাকা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, উত্তরা, বাসাবো, খিলগাঁও, মানিকনগর ও যাত্রাবাড়ীতে এর প্রকোপ বেশি।
ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সমন্বিত উদ্যোগের বিকল্প নেই। সিটি করপোরেশন ক’মাস ধরেই মশক নিধনে ওষুধ ছিটাচ্ছে। তার মান নিয়েও স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে। এখন এ রোগের মহামারী হয়ে ওঠা রোধই প্রধান কাজ। বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সংগঠিত করেও দ্রুত মশক নিধনের উদ্যোগ নিতে হবে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি করপোরেশনের যৌথ ব্যবস্থাপনায় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে কর্মসূচি বাস্তবায়নে যৌথ মনিটরিং টিমকে দিতে হবে দায়িত্ব। এ কর্মসূচি দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০