নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকাবাসীকে পথচারীবান্ধব শহর উপহার দিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সামগ্রিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। সাপ্তাহিক নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গতকাল দুপুরে নগরীর আগা সাদেক সড়ক ও আবুল হাসনাত সড়কে জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মেয়র তাপস বলেন, ‘আমরা যখন যে সড়কে হাত দিই, সেখানে কোনো সড়কের ওপর কোনো ভবনের র্যাম্প ও সিঁড়ি পাওয়া গেলে সেগুলো অপসারণ করি। আমরা চাই, মানুষ ঢাকা শহরে স্বাচ্ছন্দ্যে হেঁটে চলবে। যেখানেই ২০ ফুটের বেশি প্রশস্ত সড়ক পাব, সেখানে ২০ ফুট যাতায়াতের জন্য রেখে বাকিটা হাঁটার পথ করার নির্দেশনা দিয়েছি। এটা আমাদের মহাপরিকল্পনার আওতায় আছে। কারণ এখনও ঢাকা শহরের ৪০ শতাংশ মানুষ হেঁটে পথ চলে। সুতরাং তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে পথ চলতে পারে, পথচারীবান্ধব একটি শহর পেতে পারে, সে লক্ষ্যেই আমরা কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। যেখানে যেখানে সুযোগ রয়েছে, সেখানেই হাঁটার পথ সৃষ্টির মাধ্যমে পথচারীবান্ধব একটি শহর ঢাকাবাসীকে উপহার দিতে আমাদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।’
জলাবদ্ধতা নিরসন কার্যক্রমের ফলে এ বছর ঢাকাবাসী গত বছরের চেয়ে বেশি সুফল পাবেন মন্তব্য করে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘গত বছরই আমরা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, এ রকম শতাধিক জায়গা চিহ্নিত করেছি। সেগুলো নিয়ে কাজ শুরু করেছি। সেই কাজেরই অংশ হিসেবে আজ এখানে পরিদর্শনে এসেছি। আমরা আশাবাদী যে, আগা সাদেক ও আবুল হাসনাত সড়কের এই কাজ সম্পন্ন হলে ইনশাআল্লাহ এই এলাকায় কোনো জলাবদ্ধতা থাকবে না। ঢাকাবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবেন।’
নর্দমা ও খালে সোক ওয়েল এবং সেপটিক ট্যাংকের সংযোগ বজায় রেখে খাল দূষণমুক্ত রাখা সম্ভব কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, ‘আমরা প্রায় এক বছর আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি, নতুন যেসব ভবন ও স্থাপনা হবে, সেখানে যত মানুষ বাস করবে, সেই হিসাবটা করে তাদের নির্দিষ্ট সেপটিক ট্যাংক এবং সোক ওয়েল থাকতে হবে। আমরা যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি, এর সঙ্গে আমাদের আইনগত কিছু প্রয়োজনীয়তাও ছিল। যেমন আইনে ইমারত নির্মাণ এবং পুনর্নির্মাণ বিষয়াদি আমাদের নির্দিষ্ট কার্যাবলির মধ্যে থাকলেও বিগত ৫০ বছরের ইতিহাসে সেই কাজটি সিটি করপোরেশনকে করতে দেয়া হয়নি। আমরা এখন প্রবিধান করে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। তারা সেটা পর্যালোচনা করছে। আমরা আশাবাদী, সেটা এ মাসের মধ্যেই হয়ে যাবে, হয়ে গেলে আমরা সেটা বাস্তবায়নে যাব এবং নিজেরাই সেটা নির্ধারণ করব। নতুন করে যেসব আবাসান হবে, সেখানে অবশ্যই সেপটিক ট্যাংক ও সোক ওয়েল থাকতে হবে। পুরোনো যে ভবনগুলো আছে, সেগুলোতেও পর্যায়ক্রমে যেন তারা সেই কার্যক্রমটা করে, সে বিষয়গুলো খেয়াল করব।’
এ সময় ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া মেয়র গতকাল মাণ্ডা খাল, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে নগরীর কদমতলীতে বরাদ্দ করা জমি, নাজিরা বাজার মাতৃসদন, আজিমপুর চৌরাস্তায় নির্মাণাধীন গণশৌচাগার এবং অঞ্চল-৩-এর আঞ্চলিক রাজস্ব কার্যালয় পরিদর্শন করেন।