নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব কমাতে এপ্রিলে পাঁচ এলাকার ২৩ লাখ মানুষকে ডায়রিয়া ও কলেরার মুখে খাওয়ার টিকা খাওয়ানোর কর্মসূচি হাতে নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরে রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম জানিয়েছেন, গর্ভবতী নারীরা ছাড়া এক বছরের বেশি সব বয়সের মানুষ পরপর দুই মাস দুই ডোজের এই টিকা পাবেন।
ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ও মুখে খাওয়ার কলেরা ভ্যাকিসন ক্যাম্পেইন নিয়ে গতকাল এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এই টিকা দেয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে, এটি ডায়রিয়ার প্রকোপ কমাবে।’
এই কর্মসূচির মাধ্যমে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, দক্ষিণখান, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও সবুজবাগ এলাকায় কলেরার টিকা খাওয়ানো হবে। এসব এলাকার বাসিন্দাদের টিকা পেতে কোনো নিবন্ধনের প্রয়োজন হবে না এবং টিকা নেয়ার সময়সূচিও পরে অধিদপ্তর জানিয়ে দেবে।
পরিচালক বলেন, মে মাসে দেয়া হবে প্রথম ডোজ, জুনে দ্বিতীয় ডোজ। এক বছরের বেশি সব বয়সের সবাই কলেরার টিকা পাবেন। শুধু গর্ভবতী নারীরা পাবেন না।
মার্চের মাঝামাঝি থেকে ঢাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। এ সময় রেকর্ডসংখ্যক রোগী ভর্তি হয়েছে ঢাকার আইসিডিডিআর,বির কলেরা হাসপাতালে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১ হাজার ৩০০ রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এক মাস পেরিয়ে গেলেও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি।
কেবল আইসিডিডিআর,বিতেই গত মঙ্গলবার পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর রয়েছে।
মৃত্যুর তথ্যের এ গরমিল নিয়ে প্রশ্ন করলে নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আইসিডিডিআর,বি একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। তারা আমাদের কাছে এখনও তাদের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেনি। করলে আমরা সেগুলো বিশ্লেষণ করে দেখব।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, মার্চে দেশে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ৭০ হাজার ২৩৭ জন। এর মধ্যে শুধু রাজধানীতেই ৩৬ হাজার ৯১২ জন হাসপাতালে গেছেন।
বিভাগভিত্তিক হিসেবে ঢাকা বিভাগে ৬৬ হাজার ৪৬, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮ হাজার ৪১৬, খুলনা বিভাগে ৩৬ হাজার ২০৯, বরিশালে ৫ হাজার ৪১৫, সিলেটে ১১ হাজার ১৯৩, রাজশাহীতে ১২ হাজার ৪৮৪, রংপুরে ১০ হাজার ৫৬৫, ময়মনসিংহে ৯ হাজার ৯০৯ জন ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে গেছেন এ সময়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন, আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন উপস্থিত ছিলেন।