ঢাকায় বাসে আগুন দেয়ার ঘটনার ‘সমন্বয়কারী’ গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকায় যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রদল নেতা আমির হোসেন ও তার সহযোগী মো. সাকিব ও মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার ভোরে ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট তাদের গ্রেপ্তার করে।

সিটিটিসি বলছে, আমির হোসেন সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহŸায়ক। গ্রেপ্তারের সময় আমির ও সাকিবের কাছ থেকে দুই বোতল পেট্রল ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। বিএনপি নেতাদের নির্দেশে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি সমন্বয় করে আসছিলেন আমির। বাসে আগুন দেয়ার জন্য কর্মীদের টাকাও দেয়া হয়।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতার অংশ হিসেবে ১ নভেম্বর সকালে মুগদা বিশ্বরোডের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় মিডলাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর পালানোর সময় জনগণের সহযোগিতায় পুলিশ আল আমিন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় বাসের মালিক মুহাম্মদ দুলাল হোসেন বাদী হয়ে মুগদা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন। ঘটনার পরপরই সিটিটিসির ইন্টেলিজেন্স টিম ঘটনায় জড়িত ও আর্থিক সহায়তাকারীদের গ্রেপ্তারে কাজ শুরু করে।

জানা যায়, আল আমিন স্থানীয় বিএনপির ঊর্ধ্বতন নেতাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় তাদের দলীয় নেতা মিজানসহ অন্যদের নিয়ে যাত্রীবেশে টিটিপাড়া থেকে বাসে ওঠেন এবং ঘটনাস্থলে পেট্রল ঢেলে আগুন দেন। তার দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে সিটিটিসি ও মুগদা থানার একটি যৌথ দল আজ ভোরে গাজীপুরের বাসন থেকে মিজানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিজানুর রহমানের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, অবরোধের প্রথম দিন আমির হোসেন তাকে ফোনে বাসে আগুন দেয়ার নির্দেশ দেন। তাকে বলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের শীর্ষ নেতারা বিষয়টি সম্পর্কে জানেন ও তাদের নির্দেশেই কাজ হচ্ছে। মিজান আগুন দিতে পারলে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর তাকে যথেষ্ট পরিমাণ টাকা দেয়ার আশ্বাস দেন আমির।

সিটিটিসি প্রধান জানান, গোপন সূত্রে জানা যায়, আমির সকালের দিকে দয়াগঞ্জ এলাকায় বাসে আগুন দেয়ার পরিকল্পনা করেছেন। এ জন্য তিনি স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কিছু করার আগেই যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশি তৎপরতায় ওই এলাকায় কিছু করতে না পারায় আমির তার এক নেতার সঙ্গে আগুন দেওয়াসংক্রান্ত পরামর্শ করেন এবং অপর সহযোগী সাকিবকে নিয়ে আরামবাগ পাম্প থেকে পেট্রল নিয়ে কেরানীগঞ্জ এলাকার দিকে রওনা হন। সিটিটিসির দল তাকে অনুসরণ করে বাবুবাজার সেতুর ওপর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।

সিটিটিসি প্রধান দাবি করেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমির জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির শীর্ষ এক নেতার প্রত্যক্ষ নির্দেশনা ও আর্থিক সহযোগিতায় তিনি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়ার কার্যক্রম চলমান রেখেছেন। নেতারা তাকে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয়ার কাজটির সমন্বয়কের দায়িত্ব দেন এবং প্রয়োজনীয় অর্থ দেন। মুগদা থানা এলাকায় বাসে আগুন দেয়ার পরই তিনি মিজানের বিকাশ নম্বরে তিন হাজার টাকা পাঠান।

আমির প্রথম ধাপের অবরোধে মুগদার বাইরেও আরও বেশ কয়েকটি অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সরাসরি জড়িত বলে দাবি করে সিটিটিসি। তার বিরুদ্ধে শাহবাগ ও কোতোয়ালি থানায় আরও দুটি মামলা রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০