শেয়ার বিজ ডেস্ক: করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেই আজ ঢাকা-১০, বাগেরহাট-৪ ও গাইবান্ধা-৩ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদের মধ্যে বাগেরহাট ও গাইবান্ধার আসনে ব্যালট পেপারে ভোট হলেও ঢাকা-১০ আসনে ভোট গ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইভিএম ব্যবহারে বেশি ঝুঁকির কথা জানিয়েছে। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে ভোটারকে চিহ্নিত করা হয় এবং ভোটারকে ভোটও দিতে হয়।
এদিকে, অন্য নির্বাচনগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলেও এবার তা হয়নি। কমিশন বলেছে, তারা ছুটি না দিয়ে ভোট গ্রহণের পাইলটিং হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি সফল হলে অন্য নির্বাচনেও তা প্রয়োগ করা হবে। অবশ্য আজ শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় সাধারণ ছুটি না থাকার প্রভাব পড়বে না বলেও মনে করা হচ্ছে।
সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আসন তিনটিতে একটানা ভোট গ্রহণ চলবে। তিনটি আসনেই আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী রয়েছে। বাগেরহাট-৪ আসনে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় বাকি দুটি আসনে এ দলের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।
এদিকে সারা দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ভোটারদের মধ্যে আগে থেকেই আতঙ্ক বিরাজ করছে। করোনার কারণে ভোটার উপস্থিতি একেবারে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে খোদ নির্বাচন কমিশনও। করোনা পরিস্থিতির কারণে ভোট গ্রহণ স্থগিতে বিএনপিসহ বিভিন্ন মহলের দাবি উঠলেও কমিশন ভোট গ্রহণে অটল রয়েছে। অবশ্য কমিশন জানিয়েছে, তারা প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে করোনা সচেতনতামূলক প্রচারণা চালুর পাশাপাশি প্রত্যেক ভোটারকে ভোটদানের আগে ও পরে হ্যান্ড স্যানিটাইজেশন ও টিস্যু সববরাহ করবে।
তবে ইভিএম ব্যবহার করে ভোট গ্রহণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
আজ যে তিনটি আসনে উপনির্বাচন হবে সেগুলোর সংসদীয় আসন শূন্য হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করে ইসি। আসন তিনটির মধ্যে ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস পদত্যাগ ও অন্য দুজন সংসদ সদস্য মৃত্যুর কারণে আসনগুলো শূন্য হয়। পুরোনো ভোটার তালিকার ভিত্তিতে নির্বাচনগুলোর তফসিল হলেও, ভোট গ্রহণ হবে ২০২০ সালের হালনাগাদ করা তালিকায়। গত ২ মার্চ হালনাগাদকৃত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
ঢাকা-১০
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস পদত্যাগ করায় ঢাকা-১০ আসনটি গত ২৯ ডিসেম্বর শূন্য ঘোষণা করা হয়। রাজধানীর ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, কলাবাগান, শেরেবাংলা ও লালবাগ থানা এলাকা নিয়ে গঠিত এ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বি^তা করছেন ছয়জন। তারা হলেনÑআওয়ামী লীগের মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিএনপির শেখ রবিউল আলম, জাতীয় পার্টির হাজী মো. শাহজাহান, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের কাজী মুহাম্মদ আবদুর রহিম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের নবাব খাজা আলী হাসান আসকারী ও বাংলাদেশে কংগ্রেসের মো. মিজানুর রহমান। এ আসনে ভোটার রয়েছেন তিন লাখ ২১ হাজার ২৭৫ জন। আর ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১১৭টি ও ভোটকক্ষ ৭৭৬টি। এ আসনটির ভোট হবে ইভিএমে। শুক্রবার রাজধানীর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইভিএম পাঠানো হয়েছে।
বাগেরহাট-৪
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া বাগেরহাট-৪ আসনে উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের মো. আমিরুল ইসলাম মিলন ও জাতীয় পার্টির সাজন কুমার মিস্ত্রি। এ আসনে যাচাই-বাছাইয়ের সময়ে বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এর ফলে দুই প্রার্থীর মধ্যেই হবে নির্বাচনী লড়াই। বাগেরহাট-৪ আসনে ভোটার রয়েছেন তিন লাখ ১৬ হাজার ৫১০ জন। আর ভোট হবে ১৪৩টি ভোটকেন্দ্র ও ৬২৯টি কক্ষে। বৃহস্পতিবার থেকে নির্বাচনী এলাকায় আচরণবিধি প্রতিপালন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখভালে দুজন জুডিশিয়াল ও ২৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে নেমেছেন।
গাইবান্ধা-৩
গাইবান্ধা-৩ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ মোট চারটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেনÑআওয়ামী লীগের উম্মে কুলসুম স্মৃতি, বিএনপির অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মাইনুল হাসান সাদিক, জাতীয় পার্টির মাইনুর রাব্বী চৌধুরী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি। সংসদ সদস্য মো. ইউনুস আলী সরকারের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনে ভোটার সংখ্যা চার লাখ ৩৫ হাজার ২১১ জন, ভোটকেন্দ্র ১৩২টি ও ভোটকক্ষ ৭৮৬টি।