নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ১০টি বিভাগীয় গণসমাবেশ ডেকেছিলাম। এর মধ্যে সবশেষ কর্মসূচি হলো ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশ, যেটি আগামী ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এটি তো একটি সমাবেশ। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা ও মন্ত্রীরা বিভিন্নভাবে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন। আমাদের কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। অথচ তাদের বক্তব্যে মনে হয় যে সামনে একটি যুদ্ধ হবে।’
বিএনপির ভবিষ্যৎ কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কষ্ট হয় এমন কোনো কর্মসূচি আমরা দেব না। আমরা জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি দেব।’
সংবাদ সম্মেলনে গত সোমবার অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরা হয়। বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ, বিশেষ করে ঢাকার গণসমাবেশকে ঘিরে সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা দায়িত্বহীন-উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার অপচেষ্টা করছেনÑএমন অভিযোগ তুলে সভায় আলোচনা করা হয়। সভায় বলা হয়, ঢাকার গণসমাবেশটি চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটি বিভাগীয় সমাবেশ। অনির্বাচিত সরকারের হীন চক্রান্তকে ব্যর্থ করে সব স্তরের জনগণ তাদের ন্যায্য দাবিতে সমাবেশে সমবেত হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে সোচ্চার হবে। একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক কর্মসূচিকে বানচালের চেষ্টা করা হলে জনগণ কখনও তা মেনে নেবে না। সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে জনগণ গণসমাবেশকে সফল করবে।
ভোট নিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাস্তবতা তো এটাই। জাপানের রাষ্ট্রদূত যেটা বলেছেন, চরম সত্য কথা বলেছেন। যখন আপনারা মানুষ হত্যা করেন, খুন করেন, গুম করেন; যখন দিনের ভোট রাতে করেন, ভোট না করেই নিজেদের সরকার ঘোষণা করেন, তখন তারা বলবেন না? আজ ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির চোখ খুলেছে। তারা এখন দেখতে পাচ্ছে যে, বাংলাদেশে কী চলছে। বাংলাদেশ তো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। ইন্টারন্যাশনাল গ্লোবাল কমিউনিটির একটি অংশ। এখানে যা খুশি, তা করে যেতে পারবে না। মানুষ বলবেই। যারা উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত, তারা তাদের কথা বলবেই।’
রিজার্ভ সংকটের বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘রিজার্ভের কথা এত বলে কেন? কারণ, ঘটনা তারা ঘটিয়েছে। তারা রিজার্ভের টাকা বের করে নিয়ে গেছে। রিজার্ভের সেই টাকা দিয়ে বিদেশে বিভিন্ন কৌশলে বাড়িঘর, অ্যাসেট তৈরি করেছে।’
শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে দুর্ভাগ্যক্রমে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম যুক্ত হয়েছেÑউল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘অনেক রথী-মহারথী শেয়ার কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত। ব্যাংক তো শেষ। বারবার সেন্ট্রাল ব্যাংক বলছে যে ব্যাংকে কোনো তারল্য সংকট নেই। না থাকলে তাকে স্টেটমেন্ট দিতে হবে কেন? মানুষ ভয় পাচ্ছে কেন? কারণ, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এমন জায়গায় চলে গেছে যে মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে সাহস পাচ্ছে না। ওখান থেকেই টাকা চুরি হয়ে যেতে পারে।’