ঢাকায় আন্তর্জাতিক ওয়াক্ফ সম্মেলন শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিভিন্ন দেশের ওয়াক্ফ বিধিবিধান পর্যালোচনা করে এ কার্যক্রম আরও প্রসারিত করার লক্ষ্য সামনে রেখে রাজধানী ঢাকায় শুরু হলো দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ওয়াক্ফ সম্মেলন। গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইসলামিক রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ এবং সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্ট যৌথভাবে ‘আর্থসামাজিক উন্নয়নে ওয়াক্ফের পুনঃপ্রবর্তন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরল্যান্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কবির হাসান, ইসলামিক রিসার্স অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ড. খলিফা মোহাম্মদ আলী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আরস্তু খানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্টের চেয়ারম্যান নিয়াজ রহিম।

রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নয়নের দীর্ঘমেয়াদি ভিশনকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার সম্ভাবনাময় সম্পদগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

তিনি আরও বলেন, ইসলামী আর্থিক ব্যবস্থায় ইসলামি ব্যাংকিং, ইসলামি মাইক্রো ফাইন্যান্স, জাকাত, ওয়াক্ফ, সাদাকা, কর্জে হাসানা’র মতো বিষয়গুলো সমাজের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রমকে নিশ্চিত করতে টেকসই উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক উদ্দেশ্যকে সুন্দরভাবে সম্পৃক্ত করেছে। স্বল্প সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য দূর করতে তিনি সবার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহবান জানান।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ওয়াক্ফ ব্যবস্থাটি দারিদ্র্য দূর করে সামাজিক নিরাপত্তা বলয় নিশ্চিত করার সরকারি উদ্যোগ এবং এসডিজি অর্জনকে সহজতর করবে। তিনি ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কাজের অংশ হিসেবে এ ধরনের অধিকতর কর্মসূচি গ্রহণের আহŸান জানান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, অনেকগুলো ইসলামি ব্যাংক ক্যাশ ওয়াক্ফ ব্যবস্থাপনা করছে, যেখানে কয়েক হাজার আমানতকারী তাদের অর্থ জমা রেখেছেন। আমরা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছি। তিনি ধনী ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাকাত ও ওয়াক্ফ ব্যবস্থাপনার প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার আহŸান জানান। এ ধরনের কর্মসূচি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে বলে মনে করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে আরস্তু খান বলেন, সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখেই এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ওয়াক্ফ একটি শক্তিশালী আর্থসামাজিক কর্মসূচি, যার দারিদ্র্য বিমোচন, আর্থিক ন্যায়বিচার ও সুষম বণ্টনের সক্ষমতা রয়েছে।

কর্মশালায় বাংলাদেশসহ ১২টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। অন্য দেশগুলো হচ্ছে ব্রæনাই, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, নাইজেরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উপস্থিত থাকবেন।

প্রসঙ্গত, বিভিন্ন দেশের ওয়াক্ফের বিধিবিধান পর্যালোচনা করা, আধুনিকায়ন এবং শরিয়াহর বিধান বাস্তবায়ন, বিভিন্ন দেশের ওয়াক্ফ সম্পদের অবস্থা নিরূপণ, সম্পদ বণ্টন ও ব্যবহারের কৌশল প্রণয়ন এবং এ খাতে সুশাসন নিশ্চিতকল্পে সহায়তা প্রদানের জন্য এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সারা দেশে ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্যাশ ওয়াক্ফে তহবিলের পরিমাণ ১০৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের টাকার পরিমাণ ৮০ কোটি টাকা, যা মোট তহবিলের ৭৫ শতাংশ।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০