নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের নকশা রিভিউ এবং নির্মাণকাজ তদারকিতে পরামর্শক নিয়োগের জন্য চুক্তি সই হয়েছে। গতকাল বনানীর সেতু ভবনে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও স্পেনের টেকনিক্যা ওয়াই প্রয়েক্টোস এসএ’র (টিওয়াইপিএসএ) মধ্যে চুক্তি সই হয়। এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন।
৩০৪ কোটি ১৪ লাখ ৬৯ হাজার টাকার চুক্তিপত্রে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের পক্ষে প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদাউস ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নেতৃত্বদানকারী প্রতিষ্ঠান টিওয়াইপিএসএ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যানটোনিও রোদ্রিগোজ ক্যাস্ট্রেলোনাস চুক্তিতে সই করেন।
চুক্তি শেষে সেতুমন্ত্রী বলেন, এয়ারপোর্ট থেকে আবদুল্লাহপুর-ধউর-বড় আশুলিয়া-জিরাবো-বাইপাইল হয়ে ঢাকা ইপিজেড পর্যন্ত প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সহায়তা প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা এবং জিওবি প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় আশুলিয়া এলাকার বিস্তীর্ণ হাওরের জলপ্রবাহ অবাধ রাখা, ঢাকা মহানগর ঘিরে সার্কুলার জলপথ এবং পরিবেশ সুরক্ষায় আশুলিয়ায় বিদ্যমান সড়কবাঁধের পরিবর্তে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ একটি চারলেন সেতু নির্মাণ করা হবে। এক্সপ্রেসওয়ের নিচ দিয়ে বিদ্যমান প্রায় ১৪ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীত করা হবে। নবীনগরে দুটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য হবে প্রায় এক কিলোমিটার। সড়কের দু’পাশে প্রায় ১৮ কিলোমিটার ড্রেনেজ নির্মাণ করা হবে। ঢাকা মহানগরীর সঙ্গে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল ও ইপিজেডের যোগাযোগ সহজতর করতে বাংলাদেশ ও চীন সরকার জি-টু-জি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এরই মধ্যে বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। শিগগিরই ঋণচুক্তি সই হবে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষ করার পর এ বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির মূল কাজ শুরু হবে বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু নিয়ে যারা গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং শাস্তি তাদের পেতেই হবে। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মূল সেতুর কাজের বাস্তব অগ্রগতি শতকরা ৮১ ভাগ। মূল সেতুর ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ২৯৩টি পাইল সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট একটি পাইল ড্রাইভের কাজও আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ হবে। মূল সেতুর ৪২টি পিয়ারের মধ্যে ৩০টি পিয়ারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মাওয়া সাইটে এ পর্যন্ত ট্রাস (স্প্যান) এসেছে ২৫টি, যার মধ্যে ১৪টি স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে। ফলে এখন দুই হাজার ১০০ মিটার দৃশ্যমান। এ সময় সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন খান, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।