নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক উত্তম কুমার রায় বলেছেন, ঢাকা ওয়াসায় দুর্নীতি করার এখন খুব একটা সুযোগ নেই। আমরা গ্রাহকদের মেসেজের মাধ্যমে তাদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সমাধান করার চেষ্টা করি। যদি মনে হয় ঢাকা ওয়াসার কোথাও দুর্নীতি হচ্ছে, তাহলে তার সঠিক তথ্য নিয়ে আসেন, আমরা তার জবাব দেব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
গতকাল শনিবার বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের উদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ঢাকা ওয়াসার চলমান ‘উন্নয়ন জ্বালানি ও পানির মূল্য সমন্বয় নাগরিকদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
উত্তম কুমার রায় বলেন, আমরা খাবার পানি সরবরাহ করে থাকি। কিন্তু গ্রাহকের অসচেতনতা ও সাপ্লাই পাইপলাইনে লিকেজ থাকায় গ্রাহক খাবার পানি পাচ্ছে না, বা দুর্গন্ধযুক্ত পানি পাচ্ছে, এ অভিযোগ অস্বীকার করার মতো নয়। আমাদের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম শেষ হলে আশা রাখি শতভাগ সুপেয় পানি গ্রাহককে উপহার দিতে পারব।
আলোচনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী বদরুল আলম, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক সদস্য প্রকৌশলী মকবুল ইলাহী চৌধুরী, সিপিপির সাধারণ সম্পাদক রুহীন হোসেন প্রিন্সসহ আরও অনেকে।
ঢাকা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী বদরুল আলম বলেন, আমরা দেশের অভ্যন্তরে ব্যাংক থেকে কোনো ঋণ সংগ্রহ করি না। বিদেশি ব্যাংকের অধীনে সুদের হার কম থাকা এবং দীর্ঘমেয়াদি হওয়ায় আমরা তা দিয়েই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক সদস্য প্রকৌশলী মকবুল ইলাহী চৌধুরী বলেন, তিতাস কর্তৃপক্ষ গ্রাহকের প্রিপেইড মিটার যুক্ত করার প্রকল্প কেন বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। গ্যাসের অপচয় যদি রোধ করা যায়, তাহলে ১৫০ মিলিয়ন ট্রিউবিক গ্যাস ডাকাতি রোধ করা সম্ভব। যে গ্যাসের মাধ্যমে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব, যার দাম পড়ত দুই টাকা প্রতি ইউনিট। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জ্বালানি নীতি বাস্তবায়ন করা গেলে আমদানিনির্ভরতা কমানো যেত।
ঢাকা ওয়াসার পানির মূল্য বৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পদ্মা ও মেঘনা থেকে সেইসঙ্গে ভূগর্ভস্থ পানির উৎপাদনের কারণেই উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্মার পানি দূষণমুক্ত করে সরবরাহ করার অনুরোধ জানাই।
সিপিপির সাধারণ সম্পাদক রুহীন হোসেন প্রিন্স বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা ওয়াসার পানির মূল্য বছর বছর একাধিকবার পানির দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। জবাবদিহি না থাকা এবং মাঠ পর্যায়ে দুর্নীতি ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
আলোচনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেনÑপানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক উপপরিচালক প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক লায়ন সাব্বির আহমেদ হাজরা, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, ডাক্তার আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।