নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা-কলকাতা রুটে বাস সার্ভিস চালু হয় ১৯৯৯ সালে। যশোর হয়ে বেনাপোল-পেট্রাপোল দিয়ে কলকাতা যাতায়াত করে এ রুটের বাস। আর ২০১৫ সালে উদ্বোধন করা হয় আগরতলা-ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিস। এক্ষেত্রেও যশোর হয়ে কলকাতা যাতায়াত করে বাস। এবার ঢাকা থেকে খুলনা হয়ে কলকাতা বাস সার্ভিস চালু করা হচ্ছে।
আগামী ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে এ বাস সার্ভিস আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। গত বুধবার এ-সংক্রান্ত চুক্তি ও প্রটোকল পাঠানো হয় মন্ত্রিসভায়। আগামী সোমবার এটি অনুমোদনের কথা রয়েছে।
নতুন এ রুটেও খুলনা থেকে যশোর দিয়ে কলকাতা যাতায়াত করবে বাস। তবে বাধ্যতামূলক স্টপেজ রাখা হয়েছে খুলনায়। সেখানে যাত্রী ওঠানামার সুবিধা থাকবে। মূলত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এ বাস সার্ভিস চালু করা হবে।
যদিও ঢাকা-খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রী চাহিদা নিয়ে অনিশ্চিত বাস অপারেটররা। তারা বলছেন, যাত্রী চাহিদার কথা বিবেচনা ছাড়াই এ রুট চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে যাত্রী চাহিদা বিবেচনা ছাড়া ঢাকা-শিলং-গোয়াহাটি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছিল। তবে দুই ট্রিপের পরই আর যাত্রী পায়নি এ রুটের বাস। মাসে একবার করে কিছুদিন চালু রাখা হয় এ বাস সার্ভিস। পরে সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া যাত্রী সংকটে ঢাকা-আগরতলা বাস সার্ভিসও বন্ধ হয়ে আছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকা থেকে খুলনা হয়ে কলকাতা যাতায়ায় কমপক্ষে ১৫০ কিলোমিটার পথ অতিরিক্ত ভ্রমণ করতে হবে। এতে তিন-চার ঘণ্টা সময় বেশি লাগবে। আর ঢাকা থেকে খুলনা হয়ে যশোর পৌঁছতে যত সময় লাগবে ততক্ষণে সরাসরি বাসে ঢাকা থেকে কলকাতা পৌঁছানো সম্ভব। ফলে ঢাকা-খুলনা-কলকাতা রুটের বাসে ঢাকা পর্যন্ত কোনো যাত্রী পাওয়া যাবে না। ঢাকা থেকে খুলনা পর্যন্ত খালি বাস যাতায়াত করতে হবে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ভুটান ভারত ও নেপাল (বিবিআইএন)-এর আওতায় খুলনা-কলকাতা বাস সার্ভিস চালুর রুট চূড়ান্ত করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে এ রুটে নতুন বাস সার্ভিস প্রস্তাব দিয়েছিল ভারত। এজন্য পরীক্ষামূলক বাস চলাচল (ট্রায়াল রান) সম্পন্ন হয় ২০১৬ সালে। তবে ভুটানের আপত্তিতে আটকে যায় বিবিআইএন। ফলে খুলনা-কলকাতা বাস সার্ভিস চালু করা যায়নি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির আওতায় খুলনা-কলকাতা বাস সার্ভিস চালুর প্রস্তাব দেয় ভারত। একই আদলে ঢাকা থেকে রাজশাহী হয়ে কলকাতা বাস সার্ভিস চালুর প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ। তবে দুই পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে পরবর্তীতে খুলনা-কলকাতা ও ঢাকা-রাজশাহী-কলকাতার পরিবর্তে ঢাকা-খুলনা-কলকাতা বাস সার্ভিস চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় দুই দেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে চুক্তি ও প্রটোকল চূড়ান্ত করা হয়। আগামী সোমবার তা সংসদীয় কমিটিতে অনুমোদনের কথা রয়েছে।
জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এমএএন ছিদ্দিক শেয়ার বিজকে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চারটি বাস সার্ভিস চালুতে চুক্তি রয়েছে। এবার পঞ্চম রুটে বাস সার্ভিস চালু হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম-ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিস চালু নিয়েও আলোচনা চলছে।
উল্লেখ্য, গত ১৯৯৯ সালে প্রথম ঢাকা-কলকাতা বাস সার্ভিস চালু হয়। আর ঢাকা-আগরতলা রুটে বাস সার্ভিস চালু হয় ২০০১ সালে। এছাড়া ২০১৫ সালে আগরতলা-ঢাকা-কলকাতা ও ঢাকা-শিলং-গুয়াহাটি বাস সার্ভিস চালু করা হয়।