নিজস্ব প্রতিবেদক: যাত্রীসেবা সহজ ও আধুনিক করার লক্ষ্যে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী বিআরটিসি বাসে র্যাপিড পাস সার্ভিস চালু করল রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)। গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলিস্তানে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী।
উদ্বোধনকালে এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী জানান, এখন থেকে বিআরটিসি বাসে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা র্যাপিড পাস ব্যবহারের মাধ্যমে চলাচল করতে পারবেন। ফলে আশা করা হচ্ছে, যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে ভাড়া নিয়ে বাক-বিতণ্ডার নিরসন ঘটবে।
র্যাপিড পাস হলো একটি স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধের ব্যবস্থা। এই পাসের মাধ্যমে স্মার্ট কার্ডে রিচার্জ করে এর মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ করে নির্দিষ্ট দূরত্ব পারি দেয়া যাবে। ফলে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের সুযোগ থাকবে না পরিবহন শ্রমিকদের।
সড়ক ও সেতুর টোল, সুপারমার্কেটের কেনাকাটা থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধÑসব একটি কার্ডের মাধ্যমেই করা যাবে। এটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সরকারি পরিষেবার বিলও পরিশোধ করা যাবে। গ্রাহকরা তাদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট থেকে কার্ডটি রিচার্জ করতে পারবেন। পার্সে বা মানিব্যাগে একাধিক কার্ড নিয়ে চলাফেরা, তারপর নির্দিষ্ট বিল পরিশোধে বিশেষ একটি কার্ড খুঁজে বের করার ঝামেলা নেই।
এই পাসের মাধ্যমে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে সারাদেশে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি), বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), বিআরটিসি বাস, সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত সব বাস, নৌ-পরিবহন এবং ট্রেনসহ বিদ্যমান বিভিন্ন ধরনের ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, র্যাপিড কার্ড চালুর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, ক্যাশলেস (নগদ টাকাহীন) লেনদেনের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের সময় বাঁচানো। পাশাপাশি ঝামেলামুক্ত ভ্রমণ নিশ্চিত করা। এছাড়া গণপরিবহনে স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানো এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) এসব কার্যক্রমের সমন্বয় করবে। প্রাথমিকভাবে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) ক্লিয়ারিং ব্যাংক-ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের নির্দিষ্ট কিছু শাখায় কার্ডগ্রহীতার নাম ও মোবাইল নম্বরসহ ৪০০ টাকা জমা দিয়ে নিবন্ধনের মাধ্যমে র্যাপিড পাস কার্ড সংগ্রহ করা যাবে। পরে তা সব শাখা থেকেই করা যাবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো থেকেও যাতে এই পাস কার্ড সংগ্রহ করা যায়, সেজন্য কাজ চলমান আছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বছর পাঁচেক আগে র্যাপিড পাসের উদ্যোগ নেয়া হয়। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে ডিটিসিএ’র আওতায় ট্রান্সপোর্ট ক্লিয়ারিং হাউস প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একটি স্বয়ংক্রিয় ভাড়া আদায় ব্যবস্থা চালু এবং সেই সঙ্গে ভাড়া আদায় ব্যবস্থার সমন্বয় করা। চলতি বছরের জুনে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে বলে জানা গেছে।